নাইজেরিয়ার অস্থিরতায় ৬৯ জন নিহত হওয়ার কথা জানালেন প্রেসিডেন্ট

নাইজেরিয়ায় পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ঘিরে সৃষ্ট অস্থিরতায় ৬৯ জন নিহত হয়েছেন বলে দেশটির প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি জানিয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Oct 2020, 01:00 PM
Updated : 24 Oct 2020, 01:00 PM

নিহতদের অধিকাংশ বেসামরিক হলেও তাদের মধ্যে পুলিশ কর্মকর্তা ও সৈন্যও রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

অস্থিরতা নিরসনে সাবেক নাইজেরীয় নেতাদের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠক চলাকালে প্রেসিডেন্ট বুহারি নিহতের সংখ্যাটি ঘোষণা করেন বলে তার মুখপাত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন।

ব্যাপক সহিংসতার পর প্রতিবাদ হ্রাস পেলেও দেশটির বেশ কয়েকটি শহরে অস্বস্তিকর নিরবতা বিরাজ করছে।

বিক্ষোভ আয়োজনের মূল ভূমিকা পালনকারী গোষ্ঠীটি লোকজনকে এখন বাড়িতে অবস্থান করার আহ্বান জানিয়েছে। নারীবাদী ওই জোটটি লোকজনকে তাদের রাজ্যে কোনো ধরনের কারফিউ জারি করা হলে তা মেনে চলারও পরামর্শ দিয়েছে।

কমকর্তারা জানিয়েছেন, লাগোস রাজ্যে জারি করা কারফিউ শনিবার শিথিল করা হয়েছে।

নাইজেরিয়া পুলিশের একটি কুখ্যাত ইউনিট ‘স্পেশাল অ্যান্টি-রবারি স্কোয়াড’ (সার্স) ভেঙে দেওয়ার দাবি তুলে মূলত তরুণরা ৭ অক্টোবর থেকে প্রতিবাদ শুরু করে। প্রতিবাদ ব্যাপক রূপ নিলে প্রেসিডেন্ট বুহারি ১১ অক্টোবর পুলিশের ওই ইউনিটটি ভেঙে দেন।

কিন্তু বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা বাহিনীতে আরও পরিবর্তন আনার পাশাপাশি দেশ যেভাবে চলছে তাতে সংস্কার আনার দাবি তুলে প্রতিবাদ চালিয়ে যায়।

মঙ্গলবার রাতে নিরাপত্তা বাহিনী নাইজেরিয়ার বৃহত্তম শহর লাগোসে প্রতিবাদকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। সেখানে গুলিতে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠী অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছিল। তবে নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনী এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।

মঙ্গলবারের ওই গুলিবর্ষণের পর লাগোসসহ দেশটির অন্যান্য অংশে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে। বহু ভবনে আগুন দেওয়া হয়, দোকানপাটে লুটপাট চালানো হয় এবং কারাগারেও হামলা হয়। এরপরই প্রতিবাদ থমকে যায়।

শুক্রবার লাগোসের ফাঁকা রাস্তায় শুধু পুলিশের চেকপয়েন্ট ও ব্যারিকেডগুলোই দেখা গেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক একটি বার্তা সংস্থা।

ব্যাপক প্রতিবাদের মধ্যে রাজ্য কর্তৃপক্ষ লাগোসে অনির্দিষ্টকালের জন্য ২৪ ঘণ্টা কারফিউ জারি করেছিল। কিন্তু শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ তুলে নেওয়া হবে বলে লাগোস রাজ্য সরকার জানিয়েছে।

শুক্রবারের ওই ভার্চুয়াল বৈঠকে ৭৭ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট বুহারি জানান, তার প্রশাসন প্রতিবাদকারীদের দাবি পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু তার সরকার অস্ত্র নামিয়ে প্রতিবাদ ছিনিয়ে নেওয়া অপরাধীদের ‘গুন্ডামি’ করতে দেবে না বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।

অস্থিরতায় ৫১ বেসামরিক, ১১ পুলিশ কর্মকর্তা ও সাত সৈন্য নিহত হয়েছেন, বৈঠকে বুহারি এমনটি বলেছেন বলে তার মুখপাত্র জানিয়েছেন।

বিবিসি জানিয়েছে, উল্লিখিতদের মধ্যে মঙ্গলবার নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে লাগোসে নিহত বলে কথিতরা আছেন কিনা তাৎক্ষণিকভাবে তা পরিষ্কার হওয়া যায়নি।

ওই বৈঠকের আগে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত সংক্ষিপ্ত এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট প্রতিবাদকারীদের বিক্ষোভ প্রদর্শন বন্ধ করে ‘সমস্যার সমাধান বের করতে’ সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ভাষণে লাগোসের গুলিবর্ষণের কথা উল্লেখ না করায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি।