বিক্ষোভে নিষেধাজ্ঞা তুলল থাইল্যান্ড

সরকার ও রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে কয়েক মাস ধরে চলা বিক্ষোভ বন্ধে গত সপ্তাহে দেওয়া জরুরি ডিক্রিটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে থাইল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Oct 2020, 10:12 AM
Updated : 22 Oct 2020, 10:12 AM

ওই ডিক্রিতে জারি করা নিষেধাজ্ঞা দেশটির বাসিন্দাদের ক্ষোভ আরও উসকে দিয়েছিল; রাজধানী ব্যাংককের সড়কগুলোতে টেনে এনেছিল লাখ লাখ মানুষকে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাজনৈতিক সমাবেশে পাঁচ জন বা তার বেশি জমায়েত এবং নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলতে পারে এমন খবর প্রকাশে নিষেধাজ্ঞাসহ যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল বৃহস্পতিবার রাজকীয় গেজেটে প্রকাশিত এক সরকারি বিবৃতিতে রাত ১২টা থেকে সেগুলোর ইতি টানার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

“মারাত্মক পরিস্থিতির ঘোষণা যে কারণে দেওয়া হয়েছিল তা খানিকটা হ্রাস পেয়েছে এবং এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যেখানে সরকারি কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো নিয়মিত আইনগুলো কার্যকর করতে পারবে,” বলা হয়েছে বিবৃতিতে।

গত সপ্তাহে নিষেধাজ্ঞা জারির পেছনে রানি সুথিদার গাড়িবহর বিক্ষোভকারীদের তোপের মুখে পড়ার ঘটনাটিকে উল্লেখ করা হলেও মূলত কয়েক বছরের মধ্যে রাজা মাহা ভাজিরালংকর্ন ও প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হওয়া বিক্ষোভ দমাতেই এটি দেওয়া হয়েছিল বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

বিক্ষোভকারীরা প্রায়ুথকে তিনদিনের মধ্যে পদত্যাগের সময় বেঁধে দিয়েছে। বিক্ষোভ ও সংবাদ প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া ‘যথেষ্ট নয়’ বলেও জানিয়েছে তারা।

“জনগণের দাবি উপেক্ষা করে তিনি (প্রায়ুথ) এখনও ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। জরুরি ডিক্রি জারি করা তো উচিতই হয়নি,” বলেছেন বিক্ষোভকারীদের অন্যতম নেতা সিরাউইথ ‘যা নিউ’ সেরিতিওয়াত।

থাইল্যান্ডের সরকার বিক্ষোভ দমনের চেষ্টার অংশ হিসেবে সম্প্রতি কয়েক ডজন আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করেছিল। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া সুপরিচিত কয়েকজনও ছিলেন।

আন্দোলনকারীদের অন্যতম নেতা পাতসারাভালি মাইন্ড থানাকিতভিবুলপনকে বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল; বৃহস্পতিবার তিনি ছাড়া পেয়েছেন।

২৫ বছর বয়সী এ তরুণী জানান, তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছিল আদালত সেগুলোকে গুরুতর মনে করেনি, এছাড়া তার ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেওয়াও জরুরি ছিল। যে কারণে সহজেই জামিন মিলেছে তার।

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, ২০১৪ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা প্রায়ুথ ক্ষমতা ধরে রাখতে গত বছরের নির্বাচনে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছিলেন। থাই প্রধানমন্ত্রী অবশ্য তার বিরুদ্ধে ওঠা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। নির্বাচন অবাধ ও স্বচ্ছ হয়েছিল বলেও দাবি করেছেন তিনি।

থাইল্যান্ডে বছরের পর বছর ধরে সেনা আধিপত্য টিকিয়ে রাখার জন্য রাজতন্ত্রকে দায়ী করে বিক্ষোভকারীরা রাজার ক্ষমতা খর্ব করারও দাবি তুলেছে।

গণমাধ্যমে মন্তব্য না করার নীতি থাকায় এ প্রসঙ্গে রাজপ্রাসাদের বক্তব্য জানা যায়নি।