মৃত্যুর আগে খাশুগজির গড়ে তোলা মানবাধিকার সংগঠন ডেমোক্রেসি ফর দ্য আরব ওয়ার্ল্ড নাও (ডন) এবং হাতিস চেঙ্গিসের পক্ষ থেকে দায়ের করা ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশেই ২০১৮ সালে সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক ওই সাংবাদিককে হত্যা করা হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াশিংটন ডিসির আদালতে দায়ের করা ওই সিভিল মামলায় আরও ২০ জনকে আসামি করেছেন তুরস্কের নাগরিক হাতিস চেঙ্গিস।
খাশুগজি হত্যাকাণ্ডের ফলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে মানসিক আঘাত পেয়েছেন এবং আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন বলে মামলায় অভিযোগ করেছেন।
আর মানবাধিকার সংগঠন ডন বলেছে, প্রতিষ্ঠাতার মৃত্যুর ফলে তাদের কার্যক্রম দারুণভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা জামাল খাশুগজি ওয়াশিংটন পোস্টে নিয়মিত কলাম লিখতেন। সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কঠোর সমালোচক হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন।
খাশুগজি হত্যাকাণ্ডে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠলে সৌদি যুবরাজের ভাবমূর্তিও দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পক্ষ থেকেও বলা হয়, ওই খুনের আদেশ স্বয়ং যুবরাজ মোহাম্মদ দিয়েছেন বলে তাদের বিশ্বাস।
অবশ্য সৌদি কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় যুবরাজের জড়িত থাকার অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে।
মামলায় বলা হয়েছে, খাশুগজিকে হত্যার উদ্দেশ্য অত্যন্ত স্পষ্ট- আরব বিশ্বের গণতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যে দূতিয়ালি তিনি করছিলেন, তা থামিয়ে দেওয়াই ছিল হত্যাকারীদের লক্ষ্য।
আর হাতিস চেঙ্গিস এক বিবৃতিতে বলেছেন, “জামাল বিশ্বাস করত, যুক্তরাষ্ট্রে সবই সম্ভব। আমিও যুক্তরাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা রেখে ন্যয়বিচারের প্রত্যাশা করছি।”
জাতিসংঘের একজন বিশেষজ্ঞ খাশুগজির খুনের ঘটনাটিকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে চিহ্নিত করে সৌদি যুবরাজকেও তদন্তের আওতায় আনতে বলেছিলেন।
আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে সৌদি আরব খাশুগজি হত্যার তদন্ত ও বিচারের উদ্যোগ নেয়। সেই বিচারে গতবছর ডিসেম্বরে পাঁচ সৌদি নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড এবং তিন জনকে ২৪ বছর কারাদণ্ড দেয় সৌদি আদালত। এরপর চলতি বছর জুলাই মাসে মৃত্যুদণ্ডের ওই ৫ আসামির সাজা কমিয়ে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
তবে দণ্ডিত ওই আসামিদের পরিচয় সৌদি সরকার প্রকাশ করেনি। ফলে আসল অপরাধীরা সাজা পাচ্ছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে আন্তর্জাতিক মহলে।
পুরনো খবর