নতুন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান

বিতর্কিত অঞ্চল নাগোরনো-কারাবাখকে কেন্দ্র করে তিন সপ্তাহ আগে যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরু হয়েছিল তা বন্ধে নতুন একটি ‘মানবিক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কথা জানিয়েছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Oct 2020, 09:40 AM
Updated : 18 Oct 2020, 09:40 AM

শনিবার এ যুদ্ধবিরতি হওয়ার পর মধ্যরাত থেকেই তা কার্যকর করার সিদ্ধান্ত হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এদিকে নতুন এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কয়েক মিনিটের মাথায় সাবেক এ দুই সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ এনেছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

এর আগে গত সপ্তাহে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও পরে দুই দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লংঘনের অভিযোগ আনে।

আজারবাইজান জানায়, নাগারনো-কারাবাখ থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে তাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর গানজার ১৩ বেসামরিক নাগরিক নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। অন্যদিকে আর্মেনিয়া জানিয়েছে, আজারবাইজান যুদ্ধবিরতির পরও নাগোরনো-কারাবাখের ঘনবসতিপূর্ণ স্তেপানেকের্তে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে।

শনিবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ টেলিফোনে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি সপ্তাহখানেক আগে তার মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি মেনে চলার উপর জোর দেন বলে মস্কো জানিয়েছে।

পরে দুই দেশই প্রায় একই ধরনের বিবৃতি দিয়ে নতুন ‘মানবিক যুদ্ধবিরতির’ ঘোষণা দেয়।

নাগোরনো-কারাবাখের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়,তারা ১০ অক্টোবর মস্কোর দেওয়া বিবৃতি ও ১৭ অক্টোবর হওয়া চুক্তি অনুযায়ী মানবিক যুদ্ধবিরতির শর্ত মেনে চলতে প্রস্তুত।

বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মধ্যস্থতায় বাকু অস্বীকৃতি জানানোর পর আর্মেনিয়াই নাগোরনো-কারাবাখের হয়ে আজারবাইজানের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে।

আর্মেনিয়া বলছে, তার সেনাবাহিনী এই সংঘাতে জড়ায়নি এবং তারা আজারবাইজানের কোথাও হামলাও করেনি। তবে প্রধানমন্ত্রীর ছেলেসহ আর্মেনিয়ার অনেক নাগরিকই নাগোরনো-কারাবাখের সেনাবাহিনীতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন বলে রয়টার্স জানিয়েছে।

শনিবার নতুন যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতা হওয়ার পর তা কার্যকর হওয়ার ৪ মিনিটের মাথায় আজারবাইজান গোলা ও রকেট ছুড়ে তা লংঘন করেছে বলে অভিযোগ করেছে আর্মেনিয়া।

অন্যদিকে আজারবাইজান বলেছে, আর্মেনিয়াই সন্ধির শর্ত ভঙ্গ করেছে।

দুই দেশের এই সংঘাতকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চল গত তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে অস্থিতিশীল সময় পার করছে।

নাগোরনো-কারাবাখকে আজারবাইজান নিজেদের বলে দাবি করলেও অঞ্চলটি এখন আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠীর লোকজনের নিয়ন্ত্রণে। আর্মেনিয়াও নাগোরনো-কারাবাখের নিয়ন্ত্রণকারীদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে সমর্থন দিচ্ছে।

নাগোরনো-কারাবাখের সেনাবাহিনীতে কাজ করতে আর্মেনিয়া স্বেচ্ছাসেবকও পাঠিয়ে আসছে।

১৯৮৮-৯৪ সাল পর্যন্ত এ অঞ্চলকে ঘিরে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ চললেও পরে একটি যুদ্ধবিরতি হয়। আর্মেনিয়াতে রাশিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটি আছে। আজারবাইজানের সঙ্গেও মস্কোর সম্পর্ক ভালো।

আরও পড়ুন: