কিরগিজস্তানের প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ

বিতর্কিত এক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কয়েকদিনের বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক অস্থিরতার পর পদত্যাগ করেছেন কিরগিজস্তানের প্রেসিডেন্ট সুরোনবাই জেনবেকোভ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Oct 2020, 11:36 AM
Updated : 15 Oct 2020, 11:36 AM

এ নিয়ে দেড় দশকে মধ্য এশিয়ার এ দেশটির তিন প্রেসিডেন্টকে বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে হল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ৪ অক্টোবরের নির্বাচনের ফল নিয়ে বিরোধীদের তুমুল আপত্তির পর থেকেই কিরগিজ প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবি জোরাল হয়ে উঠেছিল। নানান নাটকীয়তার পর অবশেষে বৃহস্পতিবার তিনি পদত্যাগ করলেন।

রুশপন্থি হিসেবে পরিচিত জেনবেকোভ এদিন এক বিবৃতিতে জানান, তিনি নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে তার পদত্যাগ দাবি করা বিক্ষোভকারীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এড়াতে চান।

“রাষ্ট্রীয় বাসভবনের সুরক্ষায় অস্ত্র ব্যবহারে সামরিক বাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর বাধ্যবাধকতা আছে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই রক্তক্ষয় হবে। আমি উভয় পক্ষকেই কোনো উসকানিতে পা না দেওয়ার অনুরোধ করছি। কিরগিজস্তানের ইতিহাসে নিজের নাগরিকদের উপর গুলি চালানো এবং রক্ত ঝরানো প্রেসিডেন্ট হিসেবে নাম থাকুক, তা চাই না আমি,” বলেছেন তিনি।

অক্টোবরের পার্লামেন্ট নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যানের পর বিরোধী বিভিন্ন দলের কর্মী-সমর্থকরা রাজধানীর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সরকারি ভবনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কর্তৃপক্ষকে ফল বাতিলে বাধ্য করেছিল। তারপর থেকেই তারা প্রেসিডেন্ট জেনবেকোভকে পদ ছেড়ে দিতে চাপ দিচ্ছিল।

জেনবেকোভ গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে নতুন মন্ত্রিপরিষদ গঠনের পর পদত্যাগ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও চলতি সপ্তাহে নিজের পদ ছাড়ার সময় আরও খানিকটা পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। বলেছিলেন, নতুন নির্বাচন হওয়ার আগ পর্যন্ত তারই প্রেসিডেন্ট পদে থাকা উচিত।

দেশটির পার্লামেন্ট শনিবার জাপারভকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন দেয়। মঙ্গলবার জেনবেকোভ জানান, তিনি জাপারভের মনোনয়নে অনুমোদন দেবেন না। পার্লামেন্টকে প্রধানমন্ত্রী ঠিক করতে ফের ভোট করতেও বলেছিলেন তিনি। অবশ্য চাপের মুখে বুধবারই তিনি অবস্থান বদলে জাপারভকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নেন। 

জেনবেকোভ পদত্যাগ করায় নিয়ম অনুযায়ী এখন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা চলে যাবে স্পিকার কানাতবেক ইসায়েভের হাতে। তিনি পদত্যাগ করলে এই ক্ষমতা যাবে প্রধানমন্ত্রী জাপারভের কাছে।

জাপারভের সমর্থকরা অবশ্য আগে থেকেই ইসায়েভের পদত্যাগ চেয়ে আসছিলেন। বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের খবর পৌঁছার পর উল্লসিত জাপারভ সমর্থকদের ‘ইসায়েভ চলে যাও’ স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

স্পিকারকে পদত্যাগে চাপ দেওয়া হবে কিনা এ প্রসঙ্গে নতুন প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলতে রাজি হননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।