আর্মেনিয়ার সংবাদমাধ্যম এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় বিতর্কিত নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চলের প্রধান নগরী স্তেপানাকের্তেতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে।
উভয়পক্ষই তার আগে পরষ্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে বোমা হামলা চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলেছিল।
বিতর্কিত নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চলে দুই সপ্তাহ ধরে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর রাশিয়ার উদ্যোগে গত শুক্রবার মস্কোয় প্রায় ১০ ঘণ্টা আলোচনার পর উভয়পক্ষ অস্থায়ীভাবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে রাজি হয়। শনিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
কিন্তু আজারবাইজানের গাঞ্জা নগরীতে শনিবার রাতেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় একটি আবাসিক ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করে আজারবাইজান বলে, আর্মেনিয়াই ওই হামলা চালিয়েছে। হামলায় অন্তত সাত জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।
আজারবাইজানের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে আর্মেনিয়া বলেছে, হামলার অভিযোগ ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’।
নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চলের নেতা আরাইক হারুতিউনিয়ান জানান, রোববার সেখানে পরিস্থিতি ‘শান্ত’ আছে। তবে তিনি সাময়িক এ যুদ্ধবিরতি খুবই ‘অনিশ্চিত’ বলেও সতর্ক করেছেন।
মস্কোয় হওয়া সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশ বন্দি বিনিময় করতে পারবে এবং যুদ্ধক্ষেত্র থেকে মৃতদেহ সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে এরইমধ্যে তিন শতাধিক মানুষের প্রাণ গেছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
অঞ্চলটির প্রধান শহর স্তেপানাকের্তের অনেক বাসিন্দা গোলার হাত থেকে বাঁচতে টানা কয়েকদিন বাড়ির বেজমেন্টে ছিলেন; শহরটির বেশিরভাগ অংশই এখন বিদ্যুৎহীন।
নাগরনো-কারাবাখকে আজারবাইজান নিজেদের বলে দাবি করে এলেও আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠীর লোকজন অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করে আসছে; আর্মেনিয়াও তাদের সমর্থন দিচ্ছে।
১৯৮৮-৯৪ সাল পর্যন্ত এ অঞ্চলকে ঘিরে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ চললেও পরে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়।
কয়েক দশকের মধ্যে এবারই দেশদুটি নাগারনো-কারাবাখকে ঘিরে সবচেয়ে বড় সংঘাতে জড়িয়েছে। সাবেক এ দুই সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র যুদ্ধ শুরুর জন্য একে অপরকে দায়ীও করছে।
আর্মেনিয়াতে রাশিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটি আছে। আজারবাইজানের সঙ্গেও মস্কোর সম্পর্ক ভালো। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শুরু থেকেই দুই দেশকে যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে আসছে।