রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস মঙ্গলবার এই পুরস্কারের জন্য যুক্তরাজ্যের স্যার রজার পেনরোজ এবং জার্মানির রাইনার্ড গেনসেল ও যুক্তরাষ্ট্রের আন্দ্রেয়া গেজের নাম ঘোষণা করে।
ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর হল মহাকাশের এমন এলাকা যেখানে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এতটাই প্রচণ্ড যে সেখান থেকে কোনো কণা, এমনকি আলোর মত বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গও বেরিয়ে আসতে পারে না।
বিরাট আকৃতির কোনো নক্ষত্র যখন তার আয়ুষ্কাল শেষে চুপসে যায়, এর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি প্রচণ্ড মাত্রা পায়, বিপুল পরিমাণ ভর সন্নিবেশিত হয় তুলনামূলকভাবে ক্ষুদ্র আয়তনের ভেতরে, তখনই তা পরিণত হয় কৃষ্ণগহ্বরে।
আলো বেরিয়ে আসতে পারে না বলে ব্ল্যাক হোল দেখাও যায় না। চারপাশে যে জায়গা পর্যন্ত ওই মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কার্যকর থাকে, তাকে বলা হয় ইভেন্ট হরাইজন। এর বাইরের কোনো পর্যবেক্ষকের কাছে মনে হতে পারে, ইভেন্ট হরাইজনে গিয়ে সময় বুঝি স্থির হয়ে আছে।
আইনস্টাইনের মৃত্যুর ১০ বছর পর ১৯৬৫ সালে তার সেই সংশয় দূর করেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক পদার্থবিদ রজার পেনরোজ।
গাণিতিকভাবে তিনি দেখিয়ে দেন ব্ল্যাক হোল সত্যিই থাকা সম্ভব। আর কীভাবে তা তৈরি হয়, তাও তিনি গাণিতিক সমাধানে দেখিয়ে দেন আইনস্টাইনের সেই সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদের পথ ধরেই।
আইনস্টাইনের তত্ত্বের পর পেনরোজের ওই গাণিতিক সমাধানকেই সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কাজ বলে বিবেচনা করা হয়।
ওই এলাকার কাছাকাছি সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্রটির কক্ষপথ পরিমাপ করতে গিয়ে দুই দলই এক অদৃশ বস্তুর সন্ধান পান, যা আকারে আমাদের সৌরজগতের চেয়ে ছোট, কিন্তু ভর আমাদের সূর্যের ভরের প্রায় ৪০ লাখ গুণ বেশি। আর অদৃশ্য সেই বস্তু প্রচণ্ড শক্তিতে আশপাশের নক্ষত্রগুলোকে টানছে।
আসলে তাদের ওই গবেষণার মধ্য দিয়েই আমাদের আকাশগঙ্গার ঠিক কেন্দ্রে বিপুল বিশাল এব ব্ল্যাক হোলের অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়।
এবারের নোবেল পুরস্কারের ১ কোটি সুইডিশ ক্রোনারের মধ্যে অর্ধেক পাবেন ৮৯ বছর বয়সী স্যার পেনরোজ। ৬৮ বছরের গেনসেল এবং ৫৫ বছরের গেজ বাকি অর্ধেক ভাগ করে নেবেন।
নোবেল পুরস্কারের ইতিহাসে আন্দ্রেয়া গেজ হলেন চতুর্থ নারী, যিনি পদার্থবিদ্যায় এ পুরস্কার পাচ্ছেন।
বরাবরের মতই চিকিৎসা বিভাগের পুরস্কার ঘোষণার মধ্য দিয়ে সোমবার চলতি বছরের নোবেল মৌসুম শুরু হয়। হেপাটাইটিস সি ভাইরাস আবিষ্কারের স্বীকৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভি জে অল্টার ও চার্লস রাইস এবং যুক্তরাজ্যের মাইকেল হটন এবার চিকিৎসায় নোবেল পেয়েছেন।
বুধবার রসায়নে চলতি বছরের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার আসবে সাহিত্যের নোবেল ঘোষণা। এরপর শুক্রবার শান্তি এবং আগামী ১২ অক্টোবর অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।
এবারের নোবেল