কোভিড-১৯: জার্মানিতে কড়াকড়ি বাড়ছে

জার্মানিতে দ্বিতীয় দফায় কোভিড-১৯ সংক্রমণ বাড়তে শুরু করায় এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আবারও কড়া বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল।

নিউজডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2020, 06:25 PM
Updated : 30 Sept 2020, 06:25 PM

অনুন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশ তো বটেই যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের উন্নত দেশগুলোও করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। সংক্রমণ যখন চূড়ায় তখন দেশগুলোর চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল।

সেই তুলনায় জার্মানি এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি মোটামুটি ভালোভাবেই সমালাতে পেরেছে। চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থার উপরও বাড়তি চাপ পড়েনি, ফলে সংক্রমণ বেশি হলেও দেশটি মৃত্যু হার কমিয়ে রাখতে পেরেছে। চলা-ফেরায় কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করলেও জনজীবন বলতে গেলে স্বাভাবিক ছন্দেই আছে।

কিন্তু দেশটিতে দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণের হার যেভাবে বেড়ে চলেছে তাতে সরকার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনার পর মেরকেল সঙ্কট মোকাবেলায় নতুন কিছু পদক্ষেপ ঘোষণা করেছেন বলে জানায় জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়চে ভেলে।

যদিও জার্মানির সব প্রান্তে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার এক না হওয়ায় সরাসরি কোনও সাধারণ বিধিনিয়মে একমত হতে পারেননি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা৷ তবে মঙ্গলবার তাদের মধ্যে একটি রফা হয়েছে৷ সেই বোঝাপড়ার আওতায় গোটা দেশজুড়ে নির্দিষ্ট ফর্মুলার ভিত্তিতে একই পদক্ষেপ নেওয়া হবে৷ অর্থাৎ ঢালাও লকডাউনের বদলে স্থানীয় পর্যায়ে অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷

কোনো অঞ্চলে প্রতি লাখ মানুষের মধ্যে দৈনিক কতজন নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছেন তার উপর ভিত্তি করে বিধিনিয়ম স্থির করা হবে৷ সংখ্যাটা ৩৫-এর বেশি হলে ঘরের মধ্যে ৫০ জনের বেশি মানুষের সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হবে৷

সেক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কোনো উৎসব-অনুষ্ঠানে ২৫ জনের বেশি মানুষের সমাবেশ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে সরকার৷ আক্রান্তদের সংখ্যা ৫০ পেরিয়ে গেলে সমাবেশের ঊর্দ্ধসীমা ২৫ রাখা হবে এবং বাসভবনে ১০ জনের বেশি মানুষ যাতে একত্র না হন, সেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ৷

কিন্তু প্রশাসনের পক্ষে কারেও বাসভবনে প্রবেশ করে মানুষ গোণা সম্ভব নয় বলে সাধারণ মানুষকেই এই পরামর্শ মেনে চলার ‍অনুরোধ করেছেন মেরকেল। তবে আগে থেকে কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো অনুষ্ঠান নথিভুক্ত করলে এবং কড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অঙ্গীকার করলে এই নিয়মের ব্যতিক্রম করা যাবে৷

মেরকেল এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান বার বার মনে করিয়ে দিচ্ছেন,  বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের আচরণের উপরই করোনাভাইরাস মহামারীর গতিপ্রকৃতি অনেকটা নির্ভর করবে৷

তারা বলছেন, এখনও কোনো ওষুধ বা টিকা না থাকায় করোনাভাইরাস যেকোনো সময় মারাত্মক রূপ নিতে পারে। তাই বিধিনিয়ম শিথিল করার সময় এখনও আসেনি৷ স্বাভাবিক জীবনের ছন্দে বিঘ্ন সত্ত্বেও বৃহত্তর স্বার্থে সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে চলতে হবে৷

পরিস্থিতি সামলাতে একাধিক রাজ্যে নিয়ম ভাঙলে বড় অঙ্কের জরিমানার ঘোষণাও দেওয়া হয়ছে। বার্লিনে নাচের পার্টি আয়োজন করায় রাজ্য সরকার আয়োজকদের পাঁচ হাজার ইউরো জরিমানা করেছে৷ উত্তরে শ্লেসভিক হলস্টাইন রাজ্যে রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে ভুল নাম-ঠিকানা লিখলে এক হাজার ইউরো জরিমানা করা হচ্ছে৷ অন্য রাজ্যে সেই অঙ্ক অবশ্য ৫০ ইউরোয় সীমিত রাখা হয়েছে৷