এইডস’কে হারানো বিশ্বের প্রথম রোগী টিমোথির মৃত্যু

প্রাণঘাতী রোগ এইডস কে পরাজিত করা বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি টিমোথি রে ব্রাউন। যিনি সারা বিশ্বে ‘দ্য বার্লিন পেশেন্ট’ নামে পরিচিত। এইডসকে হারিয়ে দিলেও শেষ পর্যন্ত তিনি হেরে গেছেন ক্যান্সারের কাছে।

নিউজডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2020, 05:22 PM
Updated : 30 Sept 2020, 05:22 PM

একুইট মাইলয়েড লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত টিমোথি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় নিজ বাড়িতে মঙ্গলবার মারা যান। তার পার্টনার টিম হুফগান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর দেন বলে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান। টিমোথি ব্রাউনের বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর।

ফেইসবুকে এক পোস্টে হুপগান লেখেন, ‘‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, টিমোথি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন....পাঁচ মাস লিউকেমিয়ার সঙ্গে লড়াই করে সে চিরবিদায় নিয়েছেন, ওই সময় আমি এবং অন্যান্য বন্ধুরা তার পাশে ছিলাম।

‘‘টিম প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তিনি আজীবন এইচআইভি মুক্ত হওয়ার গল্প সবাইকে জানাবেন, তিনি তাই করেছেন এবং একজন আশার দূত হয়ে উঠেছিলেন।”

২০০৭ সালে ‘বোন ম্যারো’ প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে টিমোথি ব্রাউন এইডস মুক্ত হন। যে দাতার কাছ থেকে ব্রাউন ‘বোন ম্যারো’ নিয়েছিলেন তার শরীরে প্রাকৃতিক ভাবেই এইচআইভি ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা ছিল।

 ওই অস্ত্রোপচারের পর ব্রাউনের শরীরেও এইচআইভি ভাইরাস প্রতিরোধের ক্ষমতা জন্মায়। ফলে তাকে আর এইচআইভি ভাইরাসকে বশে রাখতে কোনো ওষুধ সেবন করতে হয়নি।

ব্রাউন ছিলেন এইডস রোগ থেকে সেরে উঠা বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি। ব্রাউনের ওই সেরে উঠা চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য নতুন এক আশার দরজা খুলে দিয়েছিল। দেখিয়ে দিয়েছিল, চিকিৎসায় দুরারোগ্য রোগ এইডস থেকেও মুক্তি সম্ভব। যদিও এইডস রোগের কার্যকর কোনও ওষুধ এখনও আবিষ্কার হয়নি। 

যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া ব্রাউন ১৯৯৫ সালে এইডস রোগে আক্রান্ত হন। তখন তিনি জার্মানির বার্লিনে বসবাস করতেন। সেখানেই তার চিকিৎসা ‍শুরু হয়। এইডসের চিকিৎসার মধ্যেই ২০০৭ সালে তার লিউকেমিয়া ধরা পড়ে এবং চিকিৎসার জন্য ‘বোন ম্যারো’ প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন পড়ে।

ওই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ক্যান্সার থেকে মুক্ত হওয়ার পাশপাশি এইচআইভি ভাইরাস মুক্তও হন ব্রাউন। কিন্তু এ বছরের শুরুর দিকে তার শরীরে আবারও ক্যান্সার ফিরে আসে এবং তা মেরুদণ্ড ও মস্তিষ্কে তা ছড়িয়ে যায়।