নাগোরনো-কারাবাখকে আজারবাইজান নিজেদের বলে দাবি করে এলেও আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠীর লোকজন অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করে আসছে, আর্মেনিয়া তাদের সমর্থন দিচ্ছে। ১৯৮৮-৯৪ সাল পর্যন্ত যুদ্ধে অঞ্চলটি আজারবাইজান থেকে বিচ্ছিন্ন হলেও স্বাধীন দেশ হিসেবে এখনও কারও স্বীকৃতি পায়নি।
বিতর্কিত এ ভূখণ্ড নিয়ে গত কয়েক দশকে বেশ কয়েকবার ছোটখাটো সংঘাতের ঘটনা ঘটলেও এবার দুই দেশই ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে যুদ্ধে নেমেছে বলে বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
দীর্ঘমেয়াদে লড়াই চললে তা দক্ষিণ ককেশাসের স্থিতিশীলতার উপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।
তুরস্ক ইতিমধ্যেই খোলামেলাভাবে আজারবাইজানের পক্ষ নিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আর্মেনিয়ার একটি জঙ্গিবিমান ভূপাতিত করারও অভিযোগ উঠেছে। আঙ্কারা অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বুধবার চতুর্থ দিনে গড়ানো এ সংঘাত বেশিদিন চললে এতে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মিত্র দেশগুলোও জড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছ।
যদিও নাগোরনো-কারবাখ নিয়ে এখনই বাইরের সাহায্যের প্রয়োজন পড়ছে না বলে জানিয়েছে আর্মেনিয়া। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান মঙ্গলবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করার পর একথা বলেছেন।
পাশিনিয়ান জানান, সোভিয়েত উত্তর একটি নিরাপত্তা চুক্তির আওতায় তিনি রাশিয়ার সহযোগিতা চাইতে পারেন, তবে এখনই তার প্রয়োজন পড়ছে না।
“কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশনে (সিএসটিও) থেকে কিংবা এই চুক্তি ছাড়াই আর্মেনিয়া তার নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে,” বলেছেন পাশিনিয়ান।
আর্মেনীয় এ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার সঙ্গে পুতিনের আলোচনায় নাগোরনো-কারবাখ সংঘর্ষে রুশ সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গই ওঠেনি।
নাগোরনো-কারবাখের চারদিনের সংঘর্ষ এর মধ্যেই শতাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। বুধবার প্রতিপক্ষের গোলায় নাগোরনো-কারবাখ লাগোয়া টার্টার শহরে আরও ৭ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আজারবাইজান কর্তৃপক্ষ।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠী তাদের হারানো ভূখণ্ড ফিরে পেতে মাদাগিজ বরাবর পাল্টা হামলা চালালেও আজারবাইজানের সেনাবাহিনী তা রুখে দিয়েছে।
অন্যদিকে আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, আজারবাইজানের সেনাবাহিনী মঙ্গলবার রাতভর গোলা ছুড়েছে; নাগোরনো-কারবাখের প্রশাসনিক কেন্দ্র স্তেপানাকের্তে শহরে আজারবাইজানের দুটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করারও দাবি করেছে তারা।
দুই পক্ষের কারও দাবিই নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।