জাতিসংঘ ভাষণে ‘ইরানকে থামানো’র আহ্বান সৌদি বাদশাহর

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বিশ্ব নেতাদের এবছরের অধিবেশনে দেওয়া ভার্চুয়াল ভাষণে গণবিধ্বংসী অস্ত্র অর্জন থেকে ইরানকে থামানো এবং দেশটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে যৌথফ্রন্ট গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ।

>>রয়টার্স
Published : 24 Sept 2020, 01:56 PM
Updated : 25 Sept 2020, 11:08 AM

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এবছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সদস্যদেশগুলোর নেতাদের ভাষণ আগে থেকেই রেকর্ড করা হয়েছিল। বুধবার সাধারণ পরিষদের হলে সেই ভাষণের ভিডিও সম্প্রচার করা হয়।

সৌদি বাদশাহ সালমান তার উদ্বোধনী ভাষণে মানবিক ত্রাণ এবং তহবিল সহায়তায় সৌদি আরবের অবদানের কথা তুলে ধরার পরই কড়া ভাষায় ইরানের সমালোচনা করেন।

ইরানকে শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করে মধ্যপ্রাচ্যে দেশটিকে একটি ‘চরমপন্থি এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী’ শক্তি আখ্যা দেন বাদশাহ সালমান। তিনি বলেন, “গত কয়েক দশকে সৌদি আরব ইতিবাচক এবং খোলা মন নিয়ে ইরানের দিকে শান্তির হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।”

২০১৫ সালে ছয় শক্তিধর দেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ইরান আগ্রাসী কর্মকাণ্ড বাড়িয়েছে, সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে এবং সন্ত্রাসবাদকে ব্যবহার করেছে- যা কেবল ‘বিশৃঙ্খলা, উগ্রবাদ আর সাম্প্রদায়িকতাই উস্কে দিয়েছে বলে বাদশাহ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, “ইরানের ব্যাপারে সবার অংশগ্রহণের ভিত্তিতে একটি সামগ্রিক সমাধান এবং সুদৃঢ় আন্তর্জাতিক অবস্থান প্রয়োজন।”

অনেকটা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সুরেই সৌদি বাদশাহ বলেন, “ইরানকে নিয়ে আমাদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তাতে আমরা এ শিক্ষাই পেয়েছি যে, সংকটের আংশিক সমাধান কিংবা সম্প্রীতির পথে হেঁটে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তায় ইরানের হুমকি ঠেকানো যাবে না।”

ওদিকে, জাতিসংঘে ইরান মিশনের মুখপাত্র আলিরেজা মিরইউসেফি ইরানের বিরুদ্ধে এই সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

আলিরেজা বলেন, সৌদি নেতার এই অহেতুক এবং অযৌক্তিক ব্ক্তব্য আঞ্চলিক দেশগুলোর মধ্যে বিশৃঙ্খলা উস্কে দেওয়া, স্থায়ী বিভক্তির বীজ বপন করা এবং আরও প্রাণঘাতী অস্ত্র বিক্রির অভিসন্ধি থাকা শক্তিগুলোকেই কেবল উস্কে দেবে।

সুন্নি-মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সৌদি আরব এবং শিয়া-অধুষ্যিত ইরান মধ্যপ্রাচ্যে একাধিক ছায়া-যুদ্ধে লিপ্ত। এর মধ্যে ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে জড়িয়েছে দেশ দুটি। পাঁচ বছর ধরে চলে আসা এ যুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ইরান-সমর্থিত হুতিদের সঙ্গে লড়ছে।