ওষুধটি খুব শিগগিরই বাজারে আসবে বলেও তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষে কোম্পানিটির এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
ফুজিফিল্মের তয়োমা ফার্মাসিউটিক্যালস প্রেসিডেন্ট জুনজি ওকাদা এই বিবৃতিতে বলেন, আমরা আজ ঘোষণা করছি যে, প্রাথমিকভাবে ফ্যাভিপিরাভির ‘অ্যাভিগান’ এর তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ করা হয়েছে।
অ্যাভিগানের কার্যকারিতায় দেখা গেছে, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর শরীরে ‘সার্স কভ-২’ ভাইরাল আরএনএ আরটি পিসিআর পরীক্ষায় শনাক্ত হয়নি। একইসাথে রোগীর শরীরের তাপমাত্রা, অক্সিজেন স্যাচুরেশনের মত উপসর্গও দূর করা সম্ভব হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চলতি বছরের মার্চ মাসে জাপান অ্যাভিগানের তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করে। এই ট্রায়ালে ১৫৬ জনের উপর পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে যে, অ্যাভিগান সেবনের ফলের, কোভিড-১৯ রোগীদের নিউমোনিয়া দ্রুত সেরে উঠছে।
পরিসংখ্যানগতভাবে অ্যাভিগান সেবন করা এবং সেবন না করা রোগীদের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য দেখা গেছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
অ্যাভিগানের কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তার বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে আগামী মাসের শুরুতে এ ওষুধ ব্যবহারের জন্য ‘আংশিক পরিবর্তন’ করে একটি নির্দেশনা জারির জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হবে।
গত ৭ এপ্রিল জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, কভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য ২০ লাখ অ্যাভিগান ট্যাবলেট তৈরি করে বিভিন্ন দেশে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে।
প্রায় ১ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলারের জরুরিভিত্তিক বর্ধিত বাজেটের একটি বড় অংশ থাকছে অ্যাভিগানের জন্য। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তৃতীয় ধাপে পরীক্ষিত এই ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে জাপানের বাইরে বেশ আলোচনা হচ্ছে।
এরই মধ্যে ২০ টি দেশে জাপান বিনামূল্যে অ্যাভিগান সরবরাহ করেছে। তবে কয়েকটি দেশে ফল ভাল এলেও জাপান ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছে।
অ্যাভিগান কীভাবে কাজ করে?
২০১৪ সালের মার্চ মাসে জাপান সরকার ফ্যাভিপিরাভির (৬-ফ্লুরো-৩-হাইড্রোক্সি-২-পাইরাজনিকারবক্সামাইড) বা অ্যাভিগানকে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস প্রতিরোধী ওষুধ হিসেবে ঘোষণা দেয়।
বুধবারের বিবৃতিতে ফুজিফিল্ম বলেছে, ইনফ্লুয়েঞ্জা মূলত আরএনএ (রাইবো নিউক্লিক এসিড) ভাইরাস। ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং সার্স-কভ-২ ভাইরাস তাদের জেনোমিক প্রতিলিপিকরণের জন্য আরএনএ নির্ভরশীল আরএনএ পলিমারেজ (আরডিআরপি) নামক এক ধরনের এনজাইমের দরকার পড়ে, যেটি এক দণ্ডাকার আরএনএ বর্ধিতকরণে সহায়তা করে।
সাধারণত এই পলিমারেজে ড্রাগ বা ওষুধ স্থাপনের জন্য বিশেষ একটি পকেট বা থলি থাকে। আর অ্যাভিগান মূলত এই থলিতে বসে আরএনএ প্রতিলিপিকরণ বন্ধ করে দেয়।
জাপানের গণমাধ্যম বলছে, কোভিড-১৯ চিকিৎসায় তৃতীয় কোন ওষুধ হিসেবে ‘অ্যাভিগান’কে খুব শিগগির অনুমোদন দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে জাপান সরকার। তবে কবে এই অনুমোদন দেওয়া হবে, তা এখনও নিশ্চিত করে জানা যায়নি।