এর মধ্য দিয়ে নতুন নাটকীয় মোড় নিয়েছে মালয়েশিয়ার রাজনীতি। করোনাভাইরাস মহামারীতে দেশের অর্থনীতি ধসে পড়ার কঠিন একটি সময়ে ক্ষমতার লড়াইয়ের এই বহিঃপ্রকাশ ঘটল।
আনোয়ার বলেছেন, তিনি ২২২ জন আইনপ্রণেতার মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন পেয়েছেন। যদিও প্রকৃত সংখ্যাটি কত এবং কারা সমর্থন দিয়েছেন তা সুনির্দিষ্টভাবে জানাননি তিনি।
তবে এই সমর্থন পেলেও আনোয়ারকে এখন নতুন সরকার গঠনে মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান আব্দুল্লাহকে রাজি করাতে হবে। ফলে তিনি সরকার গড়তে পারবেন কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে।
প্রধান কোনও রাজনৈতিক দল এখন পর্যন্ত আনোয়ারের সমর্থনে এগিয়ে না আসায় রাজা বরং দেশে কয়েকমাসের রাজনৈতিক অস্থিরতার অবসান ঘটাতে প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিনের পরামর্শে নির্বাচন ডাকার পথ বেছে নিতে পারেন।
গত ফেব্রুয়ারিতে মালয়েশিয়ায় সপ্তাহব্যাপী রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে মাহাথির মোহাম্মদের পদত্যাগের পর রাজার পছন্দে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন মুহিদ্দিন ইয়াসিন। তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কারণে মাহাথিরের পর আনোয়ার ইব্রাহিমের ক্ষমতায় আসার সুযোগ হাতছাড়া হয়।
বুধবার নতুন সরকার গঠনে আনোয়ার বিপুল সমর্থন পাওয়ার যে দাবি করেছেন, তা কেবলই একটি কথার কথা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মুহিদ্দিন। তিনি সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আনোয়ারকে এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করে দেখাতে বলেছেন।
ইয়াসিন বলেন, “এটি প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত পেরিকাতান ন্যাশনাল ( পিএন) সরকারই বহাল থাকবে এবং আমিই দেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী থাকব।”
মুহিদ্দিনের পাশাপাশি মালয়েশিয়ার ছয়টি প্রধান রাজনৈতিক দলও আনোয়ারের দাবিকে ‘সস্তা প্রচার’ বলে মন্তব্য করেছে এবং মুহিদ্দিনকে দৃঢ় সমর্থন দিয়েছে।
ওদিকে, আনোয়ার ইব্রাহিম সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমাদের শক্তিশালী,বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। আমি চার, পাঁচ, ছয় আসনের কথা বলছি না, এর চেয়েও অনেক বেশি সংখ্যার কথা বলছি। এই সংখ্যা দিয়ে মুহিদ্দিনের প্রধানমন্ত্রীত্বের পতন ঘটবে।”
আনোয়ার শেষ পর্যন্ত ক্ষমতা করায়ত্ব করতে পারলে তার ২২ বছরের সংগ্রাম সফলতার মুখ দেখবে। এই সময়ের মধ্যে প্রায় ১০ বছর জেলেই কেটেছে আনোয়ারের।
২০১৮ সালের মে মাসের নির্বাচনে মাহাথির মোহাম্মদ তার পুরাতন রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী আনোয়ার ইব্রাহিমের সাথে জোট গঠন করে ক্ষমতায় ফিরে এসেছিলেন। দুর্নীতিগ্রস্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাককে ক্ষমতাচ্যুত করতেই আনোয়ারের সঙ্গে ‘পাকাতান হারাপান’ জোট করেছিলেন মাহাথির।
আনোয়ারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেবেন বলে মাহাথির কথা দিলেও পরে তা নিয়ে গড়িমসি এবং রাজনৈতিক মিত্রদের সঙ্গে টানাপোড়েনে নানা নাটকীয়তার পর হঠাৎ করেই তিনি পদত্যাগ করেন। এরপর আনোয়ারকে পাশ কাটিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন মুহিদ্দীন ইয়াসিন।