লুকাশেঙ্কোর শপথ, বেলারুশে বিরোধীদের আরও বিক্ষোভের ডাক

ভোটের স্বচ্ছতা প্রশ্নে গণবিক্ষোভ কিংবা ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আন্তর্জাতিক আহ্বান; সব কিছু উপেক্ষা করেই টানা ষষ্ঠ মেয়াদের জন্য বেলারুশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো।

>>রয়টার্স
Published : 23 Sept 2020, 02:36 PM
Updated : 23 Sept 2020, 02:58 PM

দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে বেলারুশের ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা লুকাশেঙ্কো বুধবার নতুন মেয়াদের জন্য শপথ নেন। সাধারণত অত্যন্ত জাঁকজমক পূর্ণভাবে জাতীয় অনুষ্ঠান হিসেবে লুকাশেঙ্কোর শপথের আয়োজন হয়। কিন্তু এবার অনেকটা আকস্মিকভাবেই শপথ নিয়ে ফেলেছেন তিনি।

ছয় সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে লুকাশেঙ্কোর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করে আসা বিরোধীপক্ষ এই শপথ অবৈধ বলে নিন্দা জানিয়ে আরও বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে।

গত ৯ অগাস্ট বেলারুশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হয়। প্রায় ৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে লুকাশেঙ্কো আবারও বিজয়ী হয়েছেন বলে ঘোষণা দেয় দেশটির নির্বাচন কমিশন।

কিন্তু বিরোধী দলগুলো ভোটের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে এবং ভোটের ফলাফল প্রত্যাহার করে ওই দিন রাত থেকেই সড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করে।

আন্তর্জাতিক নানা পর্যবেক্ষক দলও ভোটে অস্বচ্ছতার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে।

লুকাশেঙ্কোর পদত্যাগের দাবিতে বেলারুশে লাগাতার বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভ দমনে বলপ্রয়োগ করছে প্রশাসন। অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। বিরোধী নেতাদের দেশত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। সাদা পোশাকে লোকজন এসে বিরোধী নেতাদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে।

এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশন এবং বিক্ষোভকারীদের দমনপীড়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

শপথ অনুষ্ঠানে ৬৬ বছরের লুকাশেঙ্ক বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে “বিশ্ব এখন মহাসঙ্কটের দ্বারপ্রান্তে’। এ অবস্থায় দেশে এখন নিরাপত্তা ও ঐক্য প্রয়োজন। আমি পারব না, বেলারুশকে ছেড়ে যাওয়ার কোনও অধিকার আমার নেই।”

ওদিকে, বিরোধীরা বুধবার বিকাল থেকেই আরও জোরালো আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। এদিন বিক্ষোভেকারীদের ছোট একটি দল বিরোধীদের লাল-সাদা পতাকা হাতে রাজধানীতে জড় হয়।

তারা ‘সাশা বেরিয়ে আসুন, আমরা আপনাকে শুভেচ্ছা জানাবো!” বলে চিৎকার করছিল। লুকাশেঙ্কোর ডাক নাম সাশা। ১৯৯৪ সাল থেকে বেলারুশের ক্ষমতায় আছেন তিনি।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে অন্তত তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ হওয়ার কথাও বলা হয়। বিকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে দেশজুড়ে আন্দোলন ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে।

জার্মানি এরই মধ্যে লুকাশেঙ্ককে স্বীকৃতি দেবে না বলে ‍জানিয়ে দিয়েছে। ইইউ’র কাছে যত দ্রুত সম্ভব নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বানও জানিয়েছে। তবে মিত্র রাশিয়া ঠিকই লুকাশেঙ্ককে সমর্থন জানিয়েছে।

এক কোটির কম জনসংখ্যার দেশ বেলারুশ ভৌগলিক অবস্থানের কারণে রাশিয়ার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নেটোর বিরুদ্ধে রাশিয়ার নিরাপদ অঞ্চল বেলারুশ। এছাড়া, ইউরোপে রাশিয়ার তেল ও গ্যাস রপ্তানির পাইপলাইনগুলো বেলারুশের মধ্য দিয়েই গেছে।