ভিডিওলিংকের মাধ্যমে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা জানান।
শি বলেছেন, তার দেশ ২০৩০ সালের আগেই কার্বন নিঃসরণের ক্ষেত্রে চূড়ায় পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে; এরপর ২০৬০ সালের আগেই কার্বন নিরপেক্ষ দেশ হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে।
তার এ ঘোষণাকে জলবায়ু পরিবর্তনবিরোধী লড়াইয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
চীন পৃথিবীর মধ্যে কার্বন ডাই অক্সাইডের সবচেয়ে বড় উৎস; দেশটি বিশ্বে কার্বন নিঃসরণের প্রায় ২৮ শতাংশের জন্যও দায়ী।
জলবায়ূ পরিবর্তন রোধে কার্যকর উপায় বের করার আলোচনায় অচলাবস্থা এবং চলতি বছরের জলবায়ু সম্মেলন ২০২১ সালে চলে যাওয়ায় এবারের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রসঙ্গটি খুব একটা গুরুত্ব পাবে না বলে মনে করা হচ্ছিল।
কিন্তু চীনের প্রেসিডেন্টের আচমকা ঘোষণা সবাইকে বিস্মিত করেছে। জলবায়ু পরিবর্তন প্রসঙ্গে তার এ দৃঢ় বিবৃতি পরিবেশবাদী অনেক সংগঠনের প্রশংসাও কুড়িয়েছে।
“আমরা ২০৩০ এর আগেই কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণের চূড়ায় যাওয়া এবং ২০৬০ সালের আগেই কার্বন নিরপেক্ষ দেশের স্বীকৃতি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছি,” বলেছেন শি।
তার এ বক্তব্যের আগ পর্যন্ত চীন ২০৩০ এর মধ্যে কার্বন নিঃসরণের সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌছানোর আকাঙ্ক্ষার কথা জানালেও নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে আনা কিংবা কবের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষ দেশ হতে চায়, সে বিষয়ে কখনও কিছু বলেনি।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে ধীরে ধীরে মুখ ফিরিয়ে নিলেও ২০১৮ ও ২০১৯ সালে চীনের কার্বন নিঃসরণের মাত্রা ছিল ঊর্ধ্বগামী।
কোভিড-১৯ মোকাবেলায় লকডাউনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ায় চলতি বসন্তে দেশটির কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ আগের তুলনায় অনেকখানি কমলেও জুনের ভেতরই দেশটি কয়লাচালিত বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র, সিমেন্ট কারখানা ও অন্যান্য ভারি শিল্প চালু করে দিয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, শি এমন এক সময়ে জাতিসংঘে জলবায়ূ পরিবর্তনের প্রসঙ্গকে সামনে নিয়ে এলেন, যখন যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে অনেকটাই চুপ।
“ডনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের পর জাতিসংঘে শি জিনপিংয়ের জলবায়ু সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি, স্পষ্টতই এটি একটি দৃঢ় ও হিসেবি পদক্ষেপ,” বলেছেন গ্রিনপিস এশিয়ার চীনা জলবায়ু নীতি বিশেষজ্ঞ লি শুও।