বিশ্বের উচিত যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করা: ইরান

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ জারিফ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র নিজের ইচ্ছা অন্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার হাতিয়ার হিসাবে নিষেধাজ্ঞার যে পদক্ষেপ নিচ্ছে তার বিরোধিতা করা উচিত বিশ্ব সম্প্রদায়ের।

>>রয়টার্স
Published : 20 Sept 2020, 02:53 PM
Updated : 20 Sept 2020, 02:53 PM

তা না হলে তারাও এই নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।

ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বাহলের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ নেওয়ার কয়েকঘণ্টা আগেই ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভিতে জারিফ বলেন, “আমেরিকানরা সচরাচর উৎপীড়ন করে এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে..  এই উৎপীড়নের ক্ষেত্রে কী করণীয় সে ব্যাপারে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।”

“যেহেতু তারাও (অন্যান্য দেশ) ভবিষ্যতে একই জিনিসের মুখোমুখি হবে, যখন আমেরিকা নর্ড স্ট্রিম কিংবা অন্যান্য প্রকল্পের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নেবে। কারণ, একজন উৎপীড়ককে একবার এমন কাজ করতে দিলে সে বার বার একই কাজ করতে থাকবে।”

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে অস্ত্র ব্যবসা যারাই করবে তাদেরকে শাস্তি দিতে একটি নির্বাহী আদেশ সইয়ের পরিকল্পনা করেছেন।

এই নির্বাহী আদেশবলে ইরানের ওপর আরোপিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা কেউ লঙ্ঘন করলে তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবেন ট্রাম্প।

ইরানের ওপর জাতিসংঘ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়ে আসতে থাকায় যুক্তরাষ্ট্র এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে অন্যান্য দেশকে যুক্তরাষ্ট্র এই সতর্কবার্তা দিচ্ছে যে, তারা ইরানে অস্ত্র বিক্রি করলে কিংবা কিনলে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়বে।

২০১৫ সালে বিশ্বের ছয় শক্তিধর দেশের সঙ্গে ইরান যে পরমাণু চুক্তি করেছিল তার আওতায় ইরানের ওপর জারি থাকা জাতিসংঘ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে ১৮ অক্টোবরে অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রের  ৩ নভেম্বরে নির্বাচনের আগে দিয়ে।

শনিবার ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, ইরানের ওপর জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে হবে এবং অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদও অক্টোবরের মাঝামাঝিতে শেষ হবে না।

যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালে ইরানের সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে এলেও তারা ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞাসহ সব জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা আবার আরোপের তোড়জোড় শুরু করেছে।

যদিও ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি সই করা অন্যান্য দেশগুলো এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বেশিরভাগ সদস্যই বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বাহলের অধিকার আছে বলে তারা মনে করে না।

জাতিসংঘের ইরানি মিশনের মুখপাত্র আলিরেজা বলেছেন, “নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের দাবির কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই এটি পরিষ্কার।” ২০১৫ সালের সেই পারমাণবিক চুক্তি এখনও আছে এবং সেই চুক্তি অনুযায়ী ইরানের ওপর সব নিষেধাজ্ঞা সময়মতোই শেষ হবেও বলে জানিয়েছেন তিনি।