মার্কিন বিচারপতি রুথ গিন্সবার্গের মৃত্যু

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রুথ বেডার গিন্সবার্গ ক্যান্সারে ভুগে ৮৭ বছর বয়সে মারা গেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Sept 2020, 01:41 PM
Updated : 19 Sept 2020, 02:31 PM

শুক্রবার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির নিজ বাড়িতে স্বজন পরিবেষ্টিত অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।

লিঙ্গ সমতার দৃঢ় সমর্থক এই নারী বিচারপতি অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। একজন গুরুত্বপূর্ণ নারীবাদী হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের উদারপন্থিদের শীর্ষ ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন।

চলতি বছরের প্রথমদিকে গিন্সবার্গ জানিয়েছিলেন, ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য কেমোথেরাপি নিচ্ছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ বিচারপতি ছিলেন গিন্সবার্গ। সুপ্রিম কোটে নিয়োগ পাওয়া দ্বিতীয় নারী বিচারপতি ছিলেন তিনি। ২৭ বছর ধরে তিনি এ দায়িত্ব পালন করেছেন।

এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস বলেছেন, “আমাদের জাতি একজন কিংবদন্তিতুল্য আইনবিদকে হারালো। আমরা সুপ্রিম কোর্টে যারা আছি তারা একজন প্রিয় সহকর্মীকে হারালাম। আজকে আমরা শোক প্রকাশ করছি, কিন্তু ভবিষ্যৎ প্রজন্ম রুথ বেডার গ্রিন্সবার্গকে একজন ক্লান্তিহীন ও ন্যায়বিচারের অটল প্রতীক হিসেবেই স্মরণ করবে- যেমনটি তাকে আমরা জানি।”

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের চার জন উদারপন্থি বিচারপতির একজন ছিলেন গিন্সবার্গ। তার স্বাস্থ্যগত দিকে গভীরভাবে নজর রাখা হচ্ছিল। তার মৃত্যু হওয়ায় তার স্থলে একজন রক্ষণশীল বিচারপতিকে নিয়োগ দিতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প; নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই তিনি এমন পদক্ষেপ নিতে পারেন, এমন সম্ভাবনা আছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে ৫ জন রক্ষণশীল বিচারপতির বিপরীতে ৪ জন উদারপন্থি ছিলেন। গিন্সবার্গের মৃত্যুতে সেখানে উদারপন্থি বিচারপতির সংখ্যা ৩ জনে দাঁড়ালো। শূন্যস্থানে আরেকজন রক্ষণশীল বিচারপতি নিয়োগ দিয়ে রক্ষণশীলদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আরও বাড়িয়ে নিতে পারেন ট্রাম্প।

ন্যাশনাল পাবলিক রেডিওর (এনপিআর) ভাষ্যমতে, মৃত্যুর আগে নাতনীর কাছে লেখা এক বিবৃতিতে এ ধরনের পদক্ষেপের বিষয়ে নিজের দৃঢ় অমতের কথা জানিয়ে গেছেন গিন্সবার্গ, নতুন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব না নেওয়া পর্যন্ত তার তার পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হবে না এমনটিই তার আশা বলে জানিয়ে গেছেন তিনি।

তবে বিবিসির অংশীদার সিবিএস নিউজকে হোয়াইট হাউসের সূত্রগুলো জানিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব গিন্সবার্গের স্থলে একজন রক্ষণশীলকে মনোনীত করবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

কিন্ত আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন বলেছেন, “ভোটারদের প্রেসিডেন্টকে বেছে নেওয়া উচিত এবং ওই প্রেসিডেন্টকে সিনেটের বিবেচনার জন্য বিচারপতিকে বাছাই করা উচিত- এতে কোনো সন্দেহ নেই।”

টুইটারে দেওয়া এক বিবৃতিতে ট্রাম্প গিন্সবার্গকে ‘আইনের একজন মহীরুহ’ ও ‘বুদ্ধিদীপ্ত ব্যক্তিত্ব’ বলে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার, সাবেক ফাস্ট লেডি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনসহ বহু মানুষ এই মহীয়সী নারীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন।