বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: সরে দাঁড়ালেন আনিয়েজ

বলিভিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেসের দলের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো প্রার্থীদের ভোট ভাগাভাগি হয়ে যেতে পারে এই শঙ্কায় আগামী মাসের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট জেনাইন আনিয়েজ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2020, 08:29 AM
Updated : 18 Sept 2020, 08:29 AM

বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বার্তায় তিনি প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

দক্ষিণ আমেরিকার এ দেশটিতে আগামী ১৮ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঠিক হয়েছে। প্রথম রাউন্ডের নির্বাচনে মোরালেসের দল মুভমেন্ট ফর স্যোশালিজমের (এমএএস) প্রার্থী লুইজ আরসেই জিততে যাচ্ছেন বলে বেশ কয়েকটি জনমত জরিপে ইঙ্গিত মিলেছে।

বলিভিয়ার আইন অনুযায়ী, প্রথম রাউন্ডের নির্বাচনে শীর্ষে থাকা প্রার্থী যদি মোট ভোটের ৪০ শতাংশ বা তার বেশি পান, এবং নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বির সঙ্গে তার ব্যবধান ১০ শতাংশ বা এর বেশি হয়; তাহলেই আর দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটের প্রয়োজন পড়বে না।

আনিয়েজ জানিয়েছেন, তিনি ডান ও মধ্যপন্থিদের ভোট ভাগাভাগি দেখতে চান না; চান না মোরালেসের দল ফের ক্ষমতায় আসুক।

নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগে বিরোধীদের আন্দোলনের পর এক অভ্যত্থানের মুখে গত বছর মোরালেস প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর আনিয়েজ বলিভিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হন। 

আর্জেন্টিনায় আশ্রয় নেওয়া মোরালেস পরে জানান, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর চাপে বাধ্য হয়েই তাকে দেশ ছাড়তে হয়েছিল।

টানা তিনটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতা বামপন্থি মোরালেস ২০০৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত টানা ১৪ বছর লাতিনের দেশটির ক্ষমতায় ছিলেন।

ক্ষমতাচ্যুত হলেও বলিভিয়ায় মোরালেস ও তার দলের জনপ্রিয়তা এখনও ব্যাপক বলে জনমত জরিপগুলোতে দেখা যাচ্ছে।

কয়েকদিন আগে প্রকাশিত সর্বশেষ জনমত জরিপেও লুইজ আরসেকে প্রতিদ্বন্দ্বিদের  অনেক এগিয়ে থাকতে দেখা গেছে। একই জনমত জরিপে আনিয়েজের অবস্থান ছিল চতুর্থ। 

“গণতন্ত্রের স্বার্থে আজ আমি বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছি। বেশ কয়েকজন প্রার্থী থাকায় ভোট ভাগাভাগি হয়ে যেতে পারে, আর এ বিভক্তির সুযোগে এমএএস ফের ক্ষমতায় চলে আসতে পারে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, মোরালেস ফিরে আসবে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, গণতন্ত্র হেরে যাবে,” বৃহস্পতিবারের ভিডিও বার্তায় এমনটাই বলেছেন বলিভিয়ার এ ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট।

গত বছর ক্ষমতায় বসার পর থেকেই আনিয়েজের নানান কর্মকাণ্ড বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল; মোরালেসবিরোধী অংশের মধ্যেও তার প্রতি অবিশ্বাস প্রবল।

এমএএসের প্রার্থী নির্বাচনে মোরালেসের সরাসরি ভূমিকা ছিল। বলিভিয়ার সাবেক এ প্রেসিডেন্টের অনেক সমর্থকের দাবি, গত বছর অন্যায়ভাবে ক্ষমতাচ্যুত করা মোরালেসই দেশটির বৈধ শাসক।

মোরালেস সমর্থকরা শুরু থেকেই বলিভিয়ার এখনকার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট জেনাইন আনিয়েজকে ‘অভ্যুত্থানকারী’ এবং ‘পশ্চিমাদের পুতুল’ বলেও অ্যাখ্যা দিয়ে আসছে।