আফগানিস্তানে ১৯ বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটাতে কাতারের উদ্যোগে শনিবার থেকে দোহায় আফগান সরকারের প্রতিনিধি দল ও তালেবান প্রতিনিধিদের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বৈঠক শুরু হয়েছে।
ওই বৈঠকে যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে শান্তি ফেরানোর উপায় খোঁজা হবে। এমনটাই আশা করছে সবাই। কিন্তু বৈঠক শুরু হতে না হতেই আফগান বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের সংঘাতে আফগান কর্মকর্তারা হতাশা প্রকাশ করেছেন।
আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়েরে মুখপাত্র ফাওয়াদ আমান বলেন, ‘‘আন্ত-আফগান আলোচনা শুরু হওয়ার পর আমরা আশা করেছিলাম তালেবান তাদের হামলার সংখ্যা কমিয়ে আনবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দিন দিন তাদের হামলার সংখ্যা বাড়ছে।”
গত শুক্রবার শান্তি আলোচনা শুরুর আগে দিয়ে তালেবান গোষ্ঠী আফগানিস্তানজুড়ে সরকারি বাহিনী এবং প্রতিষ্ঠানের ওপর ১৮ টি হামলা চালিয়েছে এবং এতে অনেকে হতাহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার শান্তি আলোচনা শুরুর পরও রাতে আফগানিস্তানের কাপসিয়া এবং কুন্দুজ প্রদেশে তালেবান হামলার খবর নিশ্চিত করে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
আফগান-তালেবান শান্তি আলোচনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সহ কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আফগান বাহিনীর বিরুদ্ধে তালেবানের নতুন করে সংঘাতের খবরে তারা হতাশা প্রকাশ করে তালেবানকে দ্রুত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার আহ্বান জানান। বৈঠকে উপস্থিত তালেবান প্রতিনিধিরা অবশ্য এখনও সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে কিছু বলেননি।
অথচ রোববার বৈঠকের প্রথম দিন উভয় পক্ষ শুরুতেই সংঘাতের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে এনে কীভাবে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে শনিবার জানিয়েছিলেন আফগানিস্তানের প্রধান নির্বাহী আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ। তিনি দোহায় আফগান সরকারের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
শনিবার উভয় পক্ষের প্রতিনিধি দল দোহায় পৌঁছালেও ওই দিন তারা মুখোমুখি হননি। কাতারের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানায়, তালেবান প্রতিনিধি দলের প্রধান মোল্লা আব্দুল গনি বারাদার এবং আফগান প্রতিনিধি দলের প্রধান আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ শনিবার কাতারের আমিরের সঙ্গে দেখা করেছেন।
আফগান বাহিনীর ওপর হামলার ব্যাপারে তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতিতে বলেছেন, আফগান বাহিনীর একটি গাড়িবহর কুন্দুজে একটি মহাসড়কে অভিযান চালাতে আসায় তালেবান যোদ্ধারা তাদের ওপর হামলা করেছে।
শনিবার রাতে আফগান নিরাপত্তা বাহিনী বাঘলান এবং জওজান প্রদেশে বিমান এবং গোলা হামলা চালিয়েছে বলেও বিবৃতিতে জানিয়েছেন জাবিহুল্লাহ।