দাবানলে কয়েকদিনে হাজার হাজার বাড়ি-ঘর পুড়ে গেছে। গত অগাস্ট থেকে শুরু হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমের অঙ্গরাজ্যগুলোতে ছড়িয়ে পড়া এই দাবানলে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ ভূমি পুড়ে গেছে তা প্রায় নিউ জার্সির সমান।
দাবানলের কারণে লাখ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। দাবানল এ সপ্তাহে ওরেগন অঙ্গরাজ্যে অন্তত পাঁচজনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।
মৃতের সংখ্যা আরো অনেক বাড়বে বলে সতর্ক করেছেন ওরেগনের গভর্নর কেট ব্রাউন। শুক্রবার তিনি বলেন, তিনটি কাউন্টিতে এক ডজনের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
উদ্ধারকারীরা দাবানলে সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়াও ছয়টি ছোট শহরের জ্বলন্ত ধ্বংস্তুপের মধ্যে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে বলে জানান জরুরি ব্যবস্থাপনা প্রধান অ্যান্ড্রু ফেলপস।
বলেন, ‘‘যতটা দ্রুত এবং ভয়াবহ রূপ নিয়ে দাবানল শহরগুলোকে গিলে খেয়েছে, তাতে হতাহতের সংখ্যা আরো অনেক বেশি হওয়ার আশঙ্কা আছে।”
দাবানলের কারণে ক্যালিফোর্নিয়া, ওরেগন এবং ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের বাতাস মারাত্মক দূষিত হয়ে উঠেছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এই আবহাওয়া মারাত্মক বিপজ্জনক। এটা সত্যি এবং এটাই ঘটছে।”
দাবানলের মধ্যে চার সন্তান নিয়ে কোনো রকমে নিজের বাড়ি থেকে পালিয়ে প্রাণরক্ষা করেন ৪১ বছরের বিয়েট্রিজ গোমেজ বোলানোস।
তিনি টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেন, মেডফোর্ডের দক্ষিণে ‘বেয়ার ক্রিক মোবাইল হোম পার্ক’ থেকে গাড়িতে করে সন্তানদের নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার দুইধারে আগুন জ্বলতে দেখে তার সন্তানরা ভয়ে চোখ বন্ধ করে রেখেছিল।
তিনি বলেন, ‘‘সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। আমাদের আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। তবে আমরা বেঁচে আছি এটাই অনেক।”
টানা চারদিন ধরে মারাত্মক তাপদাহ, শুষ্ক আবহাওয়া এবং ঝড়ো বাতাসের কারণে দাবানলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অসহায় ছিল ফায়ার ফাইটাররা। তবে শুক্রবার থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন হতে শুরু করেছে বলে জানান ওরেগন ডিপার্টমেন্ট অব ফরেস্ট্রি-র প্রধান।
তিনি বলেন, ‘‘সাগর থেকে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা এবং আর্দ্র বাতাস বইতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহেও আবহাওয়া এরকমই থাকবে। তার অর্থ, আবহাওয়া আমাদের পক্ষে থাকতে যাচ্ছে।”