দিল্লিতে ৮৬ বছরের বৃদ্ধাকে ধর্ষণ

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ৮৬ বছরের এক বৃদ্ধাকে ধর্ষণের অভিযোগে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Sept 2020, 01:17 PM
Updated : 9 Sept 2020, 06:03 PM

প্রতিবছর ভারতে হাজারো নারী ধর্ষণের শিকার হন। তারমধ্যে কিছু ঘটনা নৈতিকতা ও বিবেকবোধের চরম সীমা ছড়িয়ে যায়।

স্থানীয় সংবাদামাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় দক্ষিণপশ্চিম দিল্লির ছাওলায়  ওই ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তার হওয়া যুবকের বয়স ৩০ এর কোঠায়। 

দিল্লি কমিশন ফর উইমেন-এর প্রধান স্বাতি মালিওয়াল বিবিসি’কে বলেন, ‘‘সোমবার সন্ধ্যার দিকে ওই বৃদ্ধা তার বাড়ির বাইরে দুধওয়ালার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সে সময় ওই যুবকের সঙ্গে তার দেখা হয়।”

“যুবকটি বৃদ্ধাকে বলেন, দুধওয়ালা আসবে না। কাছেই একটি জায়গা আছে সেখানে গেলে দুধ পাওয়া যেতে পারে।”বৃদ্ধা যুবকের কথা বিশ্বাস করে তার সঙ্গে রওয়ানা হয় বলে জানান স্বাতি।

“এরপর ওই যুবক কাছের একটি খামারে নিয়ে গিয়ে বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করে। বৃদ্ধা কান্নাকাটি করে তাকে ছেড়ে দিতে বলেছিলেন। বলেছিলেন, তিনি তার দাদীর বয়সী। কিন্তু সে অনুরোধে কান না দিয়ে যুবকটি তাকে ধর্ষণ করে। বৃদ্ধা বাধা দিতে চেষ্টা করলে তাকে মারধর এবং নির্যাতনও করা হয়।”

স্থানীয় কয়েকজন গ্রামবাসী খামারের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বৃদ্ধার চিৎকার শুনতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে এবং অভিযুক্তকে পাকড়াও করে পুলিশে দেয়।

বিবিসি জানায়, স্বাতি বৃদ্ধার অবস্থা দেখতে মঙ্গলবার ছাওলায় তার বাড়িতে গিয়েছিলেন। বৃদ্ধার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা দেখে তার ‘হৃদয় ভেঙে গেছে’ বলে জানান স্বাতি। তিনি বলেন, ‘‘বয়সের ভারে তার হাতের চামড়া পুরো কুঁচকে গেছে। তার সঙ্গে যা ঘটেছে সেটা শোনার পর আমরা হতবাক হয়ে গেছি। তার মুখে ও সারা শরীরে কালশিরা পড়ে গেছে।”

শারিরীক অত্যাচারে বৃদ্ধার রক্তক্ষরণও হয়েছে জানিয়ে স্বাতি বলেন, “তিনি (বৃদ্ধা) ভয়ঙ্কর ট্রমার মধ্যে আছেন।”স্বাতি বিচারে ধর্ষণকের মৃত্যুদণ্ড দাবি করে ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি মানুষ না।

“আমি দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং নগরীর লেফ্টেন্যান্ট-গভর্ণরকে চিঠি লিখে মামলাটির দ্রুত বিচার করার অনুরোধ জানাতে যাচ্ছি। যাতে ছয় মাসের মধ্যে তার ফাঁসি হয়।”

ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো-র তথ্যানুযায়ী, ২০১৮ সালে দেশটিতে ৩৩ হাজার ৯৭৭টি ধর্ষণ মামলা দায়ের হয়েছে। যার অর্থ, সেখানে প্রতি ১৫ মিনিটে একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

তবে সমাজকর্মীদের দাবি, ধর্ষণের প্রকৃত ঘটনা এর কয়েক গুণ বেশি। কারণ, প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার কারণে ধর্ষণের বেশিরভাগ ঘটনায় মামলা হয় না। সব ঘটনা খবরের শিরোনামও হয় না।

ভারতে করোনাভাইরাস মহামারীর এ সময়ে এক অ্যাম্বুলেন্স চালক রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে ধর্ষণ করেন বলেও খবর প্রকাশ পেয়েছে।

যোগিতা ভায়ানা নামে এক নারী অধিকারকর্মী বলেন, ‘‘বয়স যাই হোক, এ দেশে কোনো নারী নিরাপদ নন। “আমি এক মাসের মেয়ে শিশু দেখেছি, যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে।”