আগুনে পুড়ল গ্রিসের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির

লেসবস দ্বীপে অবস্থিত গ্রিসের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির মোরিয়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Sept 2020, 10:25 AM
Updated : 9 Sept 2020, 10:25 AM

বিবিসি জানিয়েছে, আগুন নেভাতে ১০টি ইঞ্জিনসহ ২৫ জনের মতো দমকলকর্মীর প্রাণপন লড়াইয়ের মধ্যে শরণার্থীদের সরিয়ে নেওয়া হলেও ধোঁয়ায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে শরণার্থীদের প্রতিবাদ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হলেও বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

আগুনে সর্বস্ব হারানো শরণার্থীরা বন্দরনগরী মিতিলেনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশের বাধার মুখে সড়কে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে।

মোরিয়া শরণার্থী শিবিরে প্রায় ১৩ হাজার মানুষ বাস করতো; এটি শিবিরটির ধারণক্ষমতার চারগুণেরও বেশি।

লেসবসের ডেপুটি গভর্নর আরিস কাৎঝিকোমবিনস স্থানীয় একটি রেডিওকে জানিয়েছেন, আগুনে মোরিয়া শরণার্থী শিবিরটি ‘পুরোপুরি ধ্বংস’ হয়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জরুরি বৈঠক ডেকেছেন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোতাকিস।

আগুন শরণার্থী শিবিরের প্রায় পুরোটাতেই ছড়িয়ে পড়েছিল বলে স্থানীয় এক বাসিন্দা বিবিসিকে জানিয়েছেন।

“ভোরের আলোয় আমি দেখতে পাচ্ছি, অল্প কয়েকটি তাঁবু টিকে গেছে, তারা ঠিক আছে। কিন্তু বাকি শরণার্থী শিবির যে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, তা আমি এখান থেকেই দেখতে পাচ্ছি,” বলেছেন থানাসিস ভোলগারাবকিস।

এক বাসিন্দার শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ার পর গত সপ্তাহে শরণার্থী শিবিরটিকে কোয়োরেন্টিনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছিল। শিবিরটিতে এখন শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ৩৫।

গ্রিসের সংবাদ সংস্থা এএনএ বলেছে, আক্রান্ত ৩৫ জনের মধ্যে কয়েকজন তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আইসোলেশনে যেতে অস্বীকৃতি জানানোর পর শরণার্থী শিবিরটিতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। যদিও এ বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বেশ কয়েকটি ছোটখাট আগুন ও বিক্ষোভের ঘটনা ঘটায় কীভাবে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছিল ‘তা বলা শক্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন ডক্টরস উইদাআউট বর্ডারসের লেসবস প্রজেক্টের সমন্বয়ক মার্কো সানদ্রোন।

“এটা ছিল একটা টাইম বম্ব, যা শেষ পর্যন্ত বিস্ফোরিত হয়েছে,” শিবিরটিতে বছরের পর বছর ধরে শরণার্থীদের ‘অমানবিক অবস্থায়’ রাখার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন সানদ্রোন।

মোরিয়ায় অগ্নিসংযোগের কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে গ্রিসের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল ইআরটিকে বলেছেন সরকারের এক মুখপাত্র। লেসবস দ্বীপজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

লেসবসের রাজধানী মিতিলিনের উত্তরপূর্বে অবস্থিত মোরিয়া শিবিরে ৭০টি ভিন্ন ভিন্ন দেশের নাগরিক থাকলেও মোট শরণার্থীর ৭০ শতাংশই ছিল আফগানিস্তানের।