কোভিড-১৯: প্রতিদিন এমপি’দের পরীক্ষা চান ব্রিটিশ স্পিকার

করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে যুক্তরাজ্যের হাউজ অব কমন্সকে নিরাপদ রাখতে প্রতিদিন এমপি’দের ভাইরাস পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন স্পিকার লিন্ডসে হলি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Sept 2020, 04:42 PM
Updated : 6 Sept 2020, 04:42 PM

‘টাইমস রেডিও’র অনুষ্ঠানে হলি এ পরামর্শ দেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

রোববার সকালের টাইমস রেডিও জিএন্ডটি প্রোগ্রামে হলি বলেন, তিনি যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস (এনএইচএস) এবং সরকারের সঙ্গে দ্রুত করোনাভাইরাস পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা এবং আরও বেশি সংখ্যায় এমপি’দের পরীক্ষার সুযোগ করে দেওয়া নিয়ে কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, ‘‘আমি তাদের জিজ্ঞাসা করেছি, কেন আমরা পরীক্ষার একটা ব্যবস্থা পাব না? ” এমপিরা যাতে নিরাপদে কমন্সে ঢুকতে পারেন সেজন্য দ্রুততম সময়ে পরীক্ষা করে ফল পাওয়ার একটি ব্যবস্থা দরকার বলে জানান তিনি।

এমপি’দের নিয়মিত পরীক্ষার এই সম্ভবনার ব্যাপারে জানতে চাইলে স্পিকার হলি বলেন, ‘‘সত্যি বলতে, আমি চাই প্রত্যেক সপ্তাহে নয় বরং প্রত্যেক দিন পরীক্ষা হোক। সপ্তাহে একবার পরীক্ষা হলে শরীরে কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা সে সম্পর্কে কিছুই বোঝা যাবে না।”

মাস্ক পরে পার্লামেন্টে আসলে এমপি’দের চেনা যায় না, তাদের বক্তৃতা দিতেও অসুবিধা হয়। এই যুক্তিতে যুক্তরাজ্যের হাউজ অব কমন্সের নেতা জ্যাকব রিস-মগ চেম্বারে মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা তুলে দিয়েছেন।

জ্যাকব রিস-মগের এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে তিনিও একমত বলে জানান স্পিকার হলি। তিনি বলেন, ‘‘এমপিরা আসলেই এভাবে কাজ করতে পারছেন না।’’

তবে তিনি এও বলেছেন, ‘‘এমপিদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি কোনও ধরনের আপোস করবেন না।”

করোনাভাইরাস মহামারী সারা বিশ্বেরই পার্লামেন্ট ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন এনে দিয়েছে। এমপিরা মাস্ক পরছেন। চেম্বারগুলোতে একসঙ্গে সব সদস্যদের আসতে দেওয়া হচ্ছে না। এক বারে সীমিত সংখ্যায় সদস্যরা উপস্থিত থাকছেন, যাতে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে বসার ব্যবস্থা করা যায়।

হাউজ অব কমন্সেও একই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। অসন্তুষ্ট অনেক এমপি এর সমালোচনা করেছেন। তাদের কাউকে কাউকে পার্লামেন্টে না গিয়ে দূরে থেকে কাজ চালিয়ে নিতে হচ্ছে।

এ অবস্থায় মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া ছাড়াও হাউজ অব কমন্সের নেতা জ্যাকব রিস-মগ বাইরে থেকে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা (রিমোট ভোটিং) বাতিল করেছেন।

ফলে পার্লামেন্টে উত্থাপিত নতুন বিলের প্রস্তাব বা সংশোধনীর জন্য এমপিদের ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া গতি হারিয়েছে। কারণ, ‍আগের মত সব এমপির ভোটিং লবিতে জড়ো হয়ে ভোট দেওয়ার পরিবর্তে এখন লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায়ে রেখে ভোট দিতে হচ্ছে।

শুধু এমপিরা নন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও বড়দিনের আগে পার্লামেন্টের পরিবেশ স্বাভাবিক দেখতে চান বলে খবর বেরিয়েছে।

জনসন নিজেও কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দুয়ারে চলে গিয়েছিলেন। চিকিৎসকদের নিরন্তর চেষ্টায় তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন বলে সুস্থ হওয়ার পর জানান জনসন। এ বিষয়ে হলি বলেন, তিনি নিজেও এমনটাই চান।

তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকেও মাথার রাখতে হবে। আমরা এখনও আমাদের কাজের জায়গাকে কোভিড-১৯ মুক্ত রাখতে পেরেছি। যদি আমরা এ অবস্থা ধরে রাখতে না পারি, তবে খেলা শেষ।”

‘‘এখানে এখন দরকারের ভিত্তিতে কাজ করতে হচ্ছে। যাদের এখন এখানে প্রয়োজন নেই কেন আমরা এখন তাদের এখানে রাখব?’’পার্লামেন্ট প্রাঙ্গনে থাকা বারগুলো এখনই খোলা হবে না বলেও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন স্পিকার হলি।