হংকং নিরাপত্তা আইন নিয়ে জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ

হংকংয়ে চালু হওয়া নতুন নিরাপত্তা আইন সেখানকার অধিবাসীদের স্বাধীনতার জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বলে চীনকে লেখা এক চিঠিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Sept 2020, 02:45 PM
Updated : 4 Sept 2020, 03:00 PM

গত জুনে হংকংয়ে চীনের চাপিয়ে দেওয়া এ নিরাপত্তা আইন নিয়ে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। গতবছর হংকংজুড়ে কয়েকমাসের গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভের পর চীন সেখানে এ আইন চালু করে।

আইনটি আন্তর্জাতিক আইনের বাধ্যবাধকতার লঙ্ঘন এবং এ আইন রাজনৈতিক আন্দোলনকারীদের বিচারের জন্যও ব্যবহার হতে পারে বলে চীন সরকারকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘ মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা।

শুক্রবার ১৪ পাতার ওই চিঠি জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা হয়েছে। এর ৪৮ ঘন্টা আগে চিঠিটি চীন সরকারের কাছে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।

মানবাধিকারের সুরক্ষায় নিয়োজিত বিশেষ জাতিসংঘ দূত ফিনুলনি এলোইন-সহ আরও ছয় বিশেষজ্ঞ এই চিঠি পাঠান। তারা বলেছেন, আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় চীনের যে সব আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে তা এই নিরাপত্তা আইনে মানা হয়নি।

তাছাড়া, ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণ থেকে ১৯৯৭ সালে হংকংকে চীনের কাছে হস্তান্তরের সময় সেখানকার স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখার যে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল তাও এই নতুন আইনে প্রভাবিত হতে পারে বলে উদ্বেগ রয়েছে।

হংকংবাসীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশের অধিকারও এ আইনের ফলে ক্ষুন্ন হতে পারে। ফলে রাজনৈতিক বিরোধী, সমালোচক, শিক্ষার্থী এবং অন্যান্যদের মধ্যে আইনজীবীদের বৈধ সব কর্মসূচিও এ আইনের কারণে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে আছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকর্মীরাও আইনটি নিয়ে একই ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে।

চীনের চাপানো এ আইনের আওতায় হংকংয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদ, কর্তৃপক্ষকে অবমাননা, সন্ত্রাসবাদ ও জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করতে বিদেশি বাহিনীর সঙ্গে আঁতাঁত নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং এ ধরনের অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান করা হয়েছে।

গতমাসে হংকংয়ের পুলিশ এ আইনের আওতায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। হংকংয়ের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রপন্থি পত্রিকা অ্যাপল ডেইলিতে নাটকীয়ভাবে তল্লাশি চালানো এবং এর প্রতিষ্ঠাতা জিমি লাইকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে এ আইনের আওতায়।

নিরাপত্তা আইনে এ ব্যাপক ধরপাকড়ের পদক্ষেপে হংকং এবং বিশ্বজুড়ে নিন্দা-সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে।

আইনটিকে হংকংয়ের বিশেষ স্বায়ত্তশাসন, স্বাধীনতার জন্য হুমকি এবং বৃহত্তর গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন ও ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে বর্ণনা করেছেন সমালোচকরা। চীনের এ আইনের নিন্দা-সমালোচনা করেছে যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং নেটোও।