দ্রুত সংস্কার নতুবা নিষেধাজ্ঞা: লেবাননকে হুঁশিয়ারি ফ্রান্সের

তিন মাসের মধ্যে দেশ পুনর্গঠনের কাজ শুরু করতে না পারলে লেবাননের রাজনীতিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।

>>রয়টার্স
Published : 1 Sept 2020, 04:53 PM
Updated : 1 Sept 2020, 04:53 PM

লেবাননের রাজনীতিতে চরম বিশৃঙ্খলা এবং অভিজাত মহলের নিয়ন্ত্রণহীন দুর্নীতি দেশটির অর্থনীতিকে চরম সংকটে ফেলে দিয়েছিল।

এর মধ্যেই গত ৪ অগাস্ট রাজধানী বৈরুতের বন্দর এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে নগরীর অর্ধেটাই ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। যার ধাক্কায় জনরোষের মুখে গত ১০ অগাস্ট হাসান দিয়াব সরকার ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ায়।

বৈরুতে বিস্ফোরণের দুইদিন পর বিশ্বনেতাদের মধ্যে ম্যাক্রোঁই প্রথম লেবানন সফরে যান। সোমবার বিকালে তিনি আবারও বৈরুত গেছেন। এক মাসের কম সময়ের মধ্যে এটি ম্যাক্রোঁ দ্বিতীয়বার বৈরুত সফর।

এদিন আমেরিকান পলিটিক্যাল জার্নাল ‘পলিটিকো’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘‘বর্তমান প্রশাসনের জন্য এটাই সর্বশেষ সুযোগ। আমি জানি, আমি ঝুঁকিপূর্ণ বাজি ধরেছি... আমি হাতে থাকা একটি জিনিসই কাজে লাগাচ্ছি, তা হল আমার রাজনৈতিক ক্ষমতা।” 

ম্যাক্রোঁ জানান, তিনি লেবাননের নেতাদের কাছে আগামী ছয় থেকে ১২ মাসের মধ্যে একটি নির্বাচন আয়োজনসহ ‘বিশ্বাসযোগ্য প্রতিশ্রুতি’ এবং ‘নিয়মিত তদারকির মাধ্যমে একটি কার্যকর উন্নয়ন ব্যবস্থা’ চান।

সোমবার ম্যাক্রোঁ বৈরুত পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টা আগে মুস্তাফা আদিবকে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

লেবাননের অভিজাত মহলের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে এবং দেশটির রাজনৈতিক সংস্কার ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে মূল ভূমিকায় থেকে কাজ করছেন ম্যাক্রোঁ।

এবারের সফরে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ধ্বংস্তুপে পরিণত হওয়া বৈরুত বন্দর পরিদর্শনে যাবেন। এছাড়া, তিনি লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন।

ওদিকে, প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই আদিব দ্রুত একটি সরকার গঠন এবং শাসন ব্যবস্থায় তাৎক্ষণিক সংস্কারের ডাক দিয়েছেন। তিনি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গেও একটি চুক্তি করতে চান।

মূলত দশকের পর দশক ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাবানদের লাগামহীন দুর্নীতি এবং ঋণের বোঝার চাপে পিষ্ট হয়ে লেবাবনের অর্থনীতি চরম সংকটে পড়েছে।

গত বছর অক্টোবর থেকেই দেশটির মুদ্রামানে ধস নেমেছে। ব্যাংক ব্যবস্থা কার্যত অচল হয়ে গেছে। আমানতকারীরা ব্যাংক থেকে তাদের আমানত তুলতে পারছেন না। দারিদ্র এবং বেকারত্বের হার আকাশ ছুঁয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি শরণার্থী এ দেশটিতেই আশ্রয় নিয়ে আছে।