বেলারুশে নির্বাচন ঘিরে বিক্ষোভে আটক সহস্রাধিক, চলেছে গুলিও

পূর্ব ইউরোপের দেশ বেলারুশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে শুরু হওয়া বিক্ষোভে মঙ্গলবার এক হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। একটি শহরের বিক্ষোভে পুলিশ গুলিও ছুড়েছে বলে স্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 August 2020, 06:47 PM
Updated : 12 August 2020, 06:47 PM

মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ-পশ্চিমের নগরী ব্রেস্ট-এ গুলির ঘটনা ঘটে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছে, বিক্ষোভকারীরা ধাতব রড হাতে পুলিশের উপর হামলা করলে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়।

ব্রেস্ট ছাড়াও মিনস্ক এবং অন্যান্য নগরীতে নির্বাচন ঘিরে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। মঙ্গলবার রাতের বিক্ষোভে ৫১ জন বিক্ষোভকারী এবং ১৪ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

বিক্ষোভ প্রসঙ্গে ইইউ’র বৈদেশিক নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেন, ‘‘এবারের নির্বাচনী প্রচারের সময় বেলারুশের জনগণ তাদের মধ্যে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের তীব্র আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ ঘটিয়েছে। তাদের দমন করতে কর্তৃপক্ষ অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য নৃশংসতার আশ্রয় নিয়েছে। যাতে অন্তত একজন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন।”

গত রোববার বেলারুশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ১৯৯৪ সাল থেকে দেশটির ক্ষমতায় থাকা আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোকে পুন‍ঃনির্বাচিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, লুকাশেঙ্কো ৮০ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিদর্শকরা রোববারের ভোটে জালিয়াতি হয়েছে অভিযোগ তুলে বলেছেন, ‘সেদিন স্বাধীন ও স্বচ্ছ ভোট’ হয়নি।

রোববার রাত থেকেই দেশজুড়ে খণ্ড খণ্ড বিক্ষোভ শুরু হয়। সোমবার নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেন বিরোধী দলের নেতা সভেৎলানা তিখানভস্কায়া।

ভোটের আনুষ্ঠানিক ফল অনুযায়ী, তিনি মাত্র ১০ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। যা নিয়ে নির্বাচনী কমিটির কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তাকে প্রায় সাত ঘণ্টা আটকে রাখা হয় বলে জানায় বিবিসি। মঙ্গলবার সকালে তিনি বেলারুশ থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী দেশ লিথুনিয়ায় আশ্রয় নেন।

লিথুনিয়ার প্রেসিডেন্ট বুধবার বলেছেন, লিথুনিয়া, পোল্যান্ড এবং লাটভিয়া বেলারুশ সরকার এবং বিরোধীদলের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত। এতে বিক্ষোভকারীদের ওপর বেলারুশ কর্তৃপক্ষের দমনপীড়ন বন্ধ হবে।

বেলারুশে ভোটের আগে-পরে গত কয়েকদিন ধরে ইন্টারনেট জ্যাম করে রাখা হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বুধবার সকাল থেকে ইন্টারনেটের গতি বাড়তে শুরু করেছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভের খবর খুব সামান্যই প্রচার করছে। যার প্রতিবাদে দুইজন সংবাদ উপস্থাপক পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।