বহু লোক এখনো নিখোঁজ রয়েছেন, তাদের অনেকেই বিদেশি শ্রমিক বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৈরুতে রোববার দ্বিতীয় রাতের মতো এই দুর্যোগের বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
বৈরুত বন্দরে ঘটা ওই বিস্ফোরণের জেরে দেশটির বিচারমন্ত্রী মারি ক্লদ নাজম সোমবার পদত্যাগ করেছেন। এই নিয়ে মন্ত্রিসভার তৃতীয় আরেকজন সদস্য পদত্যাগ করলেন, কিন্তু তাতেও প্রতিবাদকারীদের ক্ষোভ কমেনি বলে ভাষ্য বিবিসির।
সোমবার বিকালে প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন। ওই একই সময় রাজধানীজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে সরকারবিরোধী প্রতিবাদকারীরা।
দিয়াব জানিয়েছেন, ছয় বছর ধরে বৈরুত বন্দরে অরক্ষিত অবস্থায় রাখা ২৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট কোনোভাবে প্রজ্বলিত হয়ে বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটেছে।
তবে শহরের কেন্দ্রস্থলের কাছে গুদামে এত বিপুল পরিমাণ বিপজ্জনক উপাদান রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়টি অনেক লেবাননিই বিশ্বাস করতে পারছেন না; অনেক দিন ধরেই দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক অভিজাতদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, দায়িত্বে অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ করে আসছেন তারা।
আল মুরসাদু অনলাইন নিউজ ওয়েবসাইটের দেওয়া উদ্ধৃতিতে গভর্নর আববুদু জানিয়েছেন, ওই বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা ২২০ জনে দাঁড়িয়েছে এবং ১১০ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
আল জাদিয়েদেন টেলিভিশন চ্যানেলকে তিনি বলেছেন, নিখোঁজ ব্যক্তিদের মধ্যে অনেক বিদেশি শ্রমিক ও লরি চালক রয়েছেন, এ কারণে তাদের শনাক্ত করা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে।
এদিকে লেবাননের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, জীবিত আর কাউকে পাওয়া না যাওয়ায় বন্দরে তল্লাশি অভিযানের উদ্ধার পর্ব বন্ধ করে দিতে বলেছে তারা।
অন্যদিকে শহরটির লাখ লাখ বাসিন্দা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িতে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন। এসব বাড়ির অধিকাংশেরই জানালা-দরজা উড়ে গেছে।
কর্মকর্তাদের হিসাবে এই বিস্ফোরণে ৩০০ কোটি ডলারেরও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং এতে লেবাননের সম্মিলিত অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়তো এক হাজার ৫০০ কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন তারা।
গত কয়েক বছর ধরে চরম রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা এবং বিশাল অংকের ঋণের বোঝার চাপে লেবননের অর্থনীতি বিধ্বস্ত অবস্থায় ছিল। তার মধ্যে গত মঙ্গলবার বৈরুতের বন্দর এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ দেশটিকে খাদের কিনারে নিয়ে দাঁড় করিয়েছে বলে জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।