করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ, নির্বাচন একবছর পেছাল হংকং

করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এর বিস্তার নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে ৬ সেপ্টেম্বরের পার্লামেন্ট নির্বাচন এক বছরের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে হংকং সরকার।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 July 2020, 12:46 PM
Updated : 31 July 2020, 12:46 PM

হংকং জানুয়ারির পর থেকে মহামারীর ‘সবচেয়ে খারাপ সময়’ পাড়ি দিচ্ছে জানিয়ে নেতা ক্যারি লাম শুক্রবার বলেছেন, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে নির্বাচন পেছানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে বড় ধরনের লোক সমাগম থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতেই এটি প্রয়োজন।

বিবিসি জানায়, হংকংয়ে সম্প্রতি কোভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়ে গেছে। শুক্রবার দেশটিতে নতুন ১২১ জনের ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, সরকার মানুষজনকে ভোট দিতে না দেওয়ার জন্য মহামারীকে অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করছে।

সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি শিবিরের বড় ধরনের জয়লাভের আশা ছিল। সরকারের নির্বাচন পেছানোর সিদ্ধান্ত তাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা।

তাছাড়া, হংকং সরকার বৃহস্পতিবারেই নতুন নিরাপত্তা আইনের বিরোধিতাসহ আরও কয়েকটি কারণে ১২ গণতন্ত্রপন্থি প্রার্থীর নির্বাচনে দাঁড়ানো নিষিদ্ধ করেছে। এরপরই সরকার নির্বাচন পেছানোর সিদ্ধান্ত জানাল। নির্বাচন কবে হবে সে দিনক্ষণও জানাননি নেতা লাম।

বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদরা বলছেন, স্থানীয় নির্বাচনী আইনে নির্বাচন কেবল ১৪ দিনের জন্য পেছানো যায়। দীর্ঘদিন দেরি হলে হংকংয়ে ‘সাংবিধানিক সংকট দেখা দেবে’।

বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলছেন, নির্বাচন নিরাপদে অনুষ্ঠানের জন্য ভোটকেন্দ্রে কম সময় থাকার মতো বেশ কিছু সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। নির্বাচন পুরো একবছরের জন্য পিছিয়ে দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।

তবে নেতা ক্যারি লাম বলছেন, দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকা করোনাভাইরাস সংক্রমণ হংকংকে গ্রাস করছে। এতে নগরীর হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়তে পারে।

তাছাড়া তার আরও যুক্তি, সেপ্টেম্বরে নির্বাচন হলে বিশেষত বয়স্ক ভোটাররা বেশি ঝুঁকিতে পড়বেন। চীনা মূল ভূখন্ড এবং বিদেশেও হংকংয়ের অনেক নিবন্ধিত ভোটার আছেন। মহামারীর কারণে সীমান্তে কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা চালু থাকায় তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

নির্বাচন পেছানোর সিদ্ধান্তকে গত সাত মাসের মধ্যে তার নেওয়া ‘সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত’ বলেও লাম উল্লেখ করেন।

হংকংয়ে টানা ১০ দিন দৈনিক নতুন করে ১শ’রও বেশি মানুষ করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে। তারপরও বিশ্বে অন্য অনেক জায়গার চেয়ে হংকংয়ে সংক্রমণের সংখ্যা এখনও অনেক কম।

তবে হংকং এর আগে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছিল বলেই প্রতীয়মান হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে সেখানে সংক্রমণ ছিল খুবই কম এবং স্থানীয় পর্যায়েও সংক্রমণ শুন্যে নেমে এসেছিল।

সেদিক থেকে সম্প্রতি সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে। হংকংয়ে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ২শ’র বেশি মানুষের এবং মারা গেছে ২৭ জন।