বন্যা কবলিত ভারতের পূর্বাঞ্চলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির শঙ্কা

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি রাজ্যের ব্যাপক অংশ বন্যায় তলিয়ে যাওয়ার পর বাধ্য হয়ে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান করা লাখ লাখ মানুষের কারণে ওই অঞ্চলে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে বলে কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 July 2020, 11:53 AM
Updated : 16 July 2020, 11:53 AM

বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাত দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর কৃষি ও প্রধান প্রধান ফসলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কিন্তু চলতি বছরের বৃষ্টি-বন্যা ভারতের জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াও নতুন বিপদের শঙ্কা নিয়ে হাজির হয়েছে। দেশটিকে এমনিতেই কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় হিমশিম খেতে হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ভারতে ৯ লাখ ৬৮ হাজারের বেশি মানুষের দেহে নতুন করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

কোভিড-১৯ দেশটির ২৪ হাজার ৯১৫ জনের প্রাণও কেড়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

এদিকে ভয়াবহ বন্যায় আসাম, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১০ জন নিহত ও ৭০ জন আহত এবং কয়েক হাজার গ্রাম তলিয়ে গেছে বলে কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।

ত্রাণশিবিরগুলোতে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের মধ্যে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

“একদিকে বন্যা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, অন্যদিকে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়া মহামারীর বিরুদ্ধেও লড়তে হচ্ছে আমাদের,” বলেছেন আসামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা।

রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির আন্তর্জাতিক ফেডারেশনের কর্মকর্তা জন ফ্লেমিং বলেছেন, বিশ্বের নজর যখন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর করোনাভাইরাস পরিস্থিতির দিকে, দক্ষিণ এশিয়ায় তখন ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের উদ্ভব হতে যাচ্ছে। 

“বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশের বাস যে এলাকায় সেই দক্ষিণ এশিয়ায় কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। কয়েক দিনের মধ্যে কেবল ভারতেই শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে,” বলেছেন ফেডারেশনের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মকর্তা ফ্লেমিং।

এবারের বন্যায় কেবল আসামেই ২০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

কাজিরাঙ্গা অভয়ারণ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে গেছে; মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৫১টি প্রাণীর। ১০২টি প্রাণীকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। কয়েকটি বাঘ এবং গণ্ডার আশেপাশের গ্রামে চলে গেছে।

ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় থাকা এ অভয়ারণ্য এক শিংওয়ালা গণ্ডারের জন্যও পরিচিত। বিশ্বে এ প্রজাতির যত গণ্ডার আছে তার দুই-তৃতীয়াংশেরই বাস এ কাজিরাঙ্গা অভয়ারণ্যে, জানিয়েছে রয়টার্স।