‘কোভিড পার্টি’ করে আক্রান্ত, অতঃপর মৃত্যু

করোনাভাইরাস বলে কিছু নেই, সব ভুয়া- এ বিশ্বাস থেকে এক মার্কিন যুবক যোগ দিয়েছিলেন ‘কোভিড পার্টি’তে। আর তারপরই সংক্রমিত হয়ে শেষ পর্যন্ত এ ভাইরাসে প্রাণ হারালেন তিনি।

দ্যনিউ ইয়র্ক টাইমস
Published : 13 July 2020, 03:58 PM
Updated : 13 July 2020, 03:58 PM

ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের স্যান অ্যান্টোনিও শহরে। এ শহরের মেথোডিস্ট হাসপাতালে মারা যান ৩০ বছরের ওই যুবক।

হাসপাতালটির প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. জেন অ্যাপেলবি বলেন, করোনাভাইরাস গুজব, নাকি সত্যিই কিছু তা পরখ করে দেখতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত একজনের সঙ্গে পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন যুবকটি।

এ ধরনের পার্টিকে বলা হয় ‘কোভিড পার্টি’। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে অ্যাপেলবি বলেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত কেউ এ ধরনের পার্টি আয়োজন করেন।

এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, সত্যিই এ ভাইরাসের অস্তিত্ব আছে কিনা বা এতে কেউ আক্রান্ত হন কিনা তা দেখা এবং সংক্রমণের মধ্য দিয়ে অ্যান্টিবডি তৈরির চেষ্টায় ইচ্ছাকৃতভাবেই এ পার্টি করা হয়।

তবে ওই যুবক কবে কোভিড পার্টিতে গিয়েছিলেন বা কতজন সেখানে অংশ নিয়েছিল সে বিষয়ে চিকিৎসক অ্যাপেলবি কিছু জানাননি। যুবকের নামও প্রকাশ করা হয়নি।

ওই ব্যক্তি মারা যাওয়ার আগে দিয়ে নার্সকে একথা বলে গিয়েছিলেন বলে জানান ডা. অ্যাপেলবি। যুবকটি বলেছিলেন, ‘‘আমি একটা ভুল করে ফেলেছি। ভেবেছিলাম এটা(করোনাভাইরাস) ভুয়া, কিন্তু তা নয়।”

ডা. অ্যাপলবি বলেন, জনগণ, বিশেষ করে টেক্সাসের বাসিন্দাদের সতর্ক করতে এ রোগীর কথা সবাইকে জানিয়েছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে। শনিবার সেখানে নতুন করে আট হাজার ৩৩২ রোগী শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত দুই লাখ ৫৮ হাজারের বেশি। মোট মৃত্যু তিন হাজার ২০০ জন।

‘কোভিড পার্টি’ আয়োজন ‘বিপজ্জনক, দায়িত্বজ্ঞনহীন এবং এতে প্রাণনাশের আশঙ্কা আছে’ বলে বর্ণনা করেন নিউ ইয়র্কের চিকিৎসক রর্বাট গ্লাটার।

চিকেনপক্সের টিকা আবিষ্কারের আগে লোকজন একইভাবে অ্যান্টিবডি তৈরির চেষ্টায় তাদের শিশু সন্তানদের নিয়ে ‘চিকেনপক্স পার্টি’র আয়োজন করত। তাদের বিশ্বাস ছিল, শিশু বয়সে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে যাওয়াই ভাল। বড় হওয়ার পর আক্রান্ত হলে শারীরিক অসুবিধা বেশি হয়।

ডা. গ্লাটার বলেন, করোনাভাইরাস চিকেনপক্সের মত নয়। তাই এ ধরনের পার্টি করা উচিত না।

অ্যালাবামা অঙ্গরাজ্যেও শিক্ষার্থীরা এ ধরনের পার্টি করছে বলে জানিয়েছে ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’ পত্রিকা। কে আগে আক্রান্ত হবে তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে রীতিমত প্রতিযোগিতা চলছে।

অথচ গত কয়েকদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক আক্রান্তের রেকর্ড হচ্ছে। এক শুক্রবারই দেশটিতে ৬৮ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়।

করোনাভাইরাসে একবার আক্রান্ত হলে দেহে এর বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে উঠে বলে বিশ্বাস বিজ্ঞানীদের।

কিন্তু এটি এখনও শতভাগ প্রমাণিত নয়, আর একবার আক্রান্ত হলে পরে আবার আক্রান্ত না হওয়ার বিষয়টিও এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।