হায়া সোফিয়া’কে মসজিদ বানানোয় ‘ব্যথিত’ পোপ

ইস্তাম্বুলের বিশ্বখ্যাত হায়া সোফিয়া জাদুঘরকে তুরস্কের মসজিদে রূপান্তরের সিদ্ধান্তে ‘খুবই ব্যথিত’ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস।

>>রয়টার্স
Published : 12 July 2020, 05:56 PM
Updated : 12 July 2020, 06:11 PM

রোববার ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটারস স্কয়ারের সাপ্তাহিক সভায় তিনি বলেন, “আমি ইস্তাম্বুল নিয়ে চিন্তা করছি, সান্তা সোফিয়া নিয়ে চিন্তা করে খুবই কষ্ট পাচ্ছি।”

বিশ্বে বেশ কয়েকজন ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতার পাশাপাশি পোপও তুরস্কের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়িপ এরদোয়ান হায়া সোফিয়ায় ২৪ জুলাইয়ে প্রথম নামাজ হবে বলে জানিয়েছেন।

তুরস্কের শীর্ষ প্রশাসনিক আদালত গত শুক্রবার হায়া সোফিয়ার জাদুঘর মর্যাদা নাকচ করার পর এটিকে আবার মসজিদে রূপান্তরের ঘোষণা দেন এরদোয়ান।

‘ওয়ার্ল্ড কাউন্সিল অব চার্চেস’ এরদোয়ানকে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে এবং বিশ্বের অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের ইস্তাম্বুল-ভিত্তিক আধ্যাত্মিক নেতা প্যাট্রিয়ার্ক বার্থোলোমিউ এ সিদ্ধান্ত ‘হতাশাজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন।

এরদোয়ান বলছেন, প্রায় ১৫০০ বছরের পুরোনো স্থাপনা হায়া সোফিয়া একসময় খ্রিস্ট্রান ক্যাথেড্রাল ছিল। এটি মুসলিম, খ্রিস্টান এবং বিদেশিদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

তিনি বলেন, তুরস্ক তাদের সার্বভৌম অধিকারেই হায়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তর করেছে। এ সিদ্ধান্তের সমালোচনাকে তারা তাদের স্বাধীনতার ওপর আঘাত হিসাবেই দেখবে।

ষষ্ঠ শতকে হায়া সোফিয়া নির্মিত হওয়ার পর থেকে প্রায় এক হাজার বছর ধরে অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় কেন্দ্র ছিল এটি।

১৪৫৩ সালে ইস্তাম্বুল অটোমান সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হলে স্থাপনাটিকে মসজিদে রূপান্তর করা হয়। এরপর ১৯৩৪ সালে মুস্তফা কামাল আতার্তুকের আমলে এটিকে জাদুঘর করা হয়েছিল।

গত শুক্রবার তুরস্কের প্রশাসনিক আদালতের রায়ে বলা হয়, “১৯৩৪ সালে মসজিদ হিসেবে এর ব্যবহার বন্ধ করে জাদুঘর হিসেবে ব্যবহারের যে সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভা নিয়েছিল তা আইনসঙ্গত নয়।”

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য হায়া সোফিয়াকে গত বছরের এক নির্বাচনী সমাবেশে মসজিদে পরিণত করার তাগাদা দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান।

তুরস্কের ইসলামপন্থিরা দীর্ঘদিন ধরে স্থাপনাটিকে ফের মসজিদে রূপান্তরের দাবি জানালেও এর বিরোধিতা করে এসেছেন অনেকেই।