কোভিড-১৯: ভিয়েতনামের সবচেয়ে গুরুতর রোগীও সুস্থ

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সফল ভিয়েতনাম এখনো মৃত্যুহীন। দেশটিতে এ রোগে আক্রান্ত সবচেয়ে গুরুতর রোগীটিও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 July 2020, 12:57 PM
Updated : 11 July 2020, 02:39 PM

যুক্তরাজ্যের নাগরিক স্টেফেন ক্যামেরন পেশায় পাইলট। ৪৩ বছরের ক্যামেরন গত মার্চের শুরুর দিকে ভিয়েতনাম এয়ারলাইন্সের হয়ে যুক্তরাজ্য থেকে নিজের প্রথম ফ্লাইট নিয়ে দেশটিতে যান।

তার তিনদিন পর জ্বরাক্রান্ত ক্যামেরন ভর্তি হন হাসপাতালে। হো চি মিন সিটির একটি বারে গিয়ে তিনি সংক্রমিত হয়েছেন বলে ধারণা করা হয়।

ভিয়েতনাম সরকার শুরু থেকেই কোভিড-১৯ আক্রান্ত ও সম্ভাব্য আক্রান্তদের খুঁজে বের করতে প্রচুর পরীক্ষা এবং সময়মত কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের উৎপত্তিস্থল চীনের প্রতিবেশী হিসেবে উচ্চ সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকার পরও দেশটিতে এখন পর্যন্ত মাত্র    ৩৭০ জন নতুন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

ক্যামেরনের অসুস্থতা ভিয়েতনাম জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল। তাকে সুস্থ করতে দেশটির চিকিৎসকরা প্রাণপন লড়াই করেছেন। ক্যামেরন যেন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ভিয়েতনামের সাফল্যের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন।

‘রোগী ৯১’ নামে পরিচিত ক্যামেরন এক পর্যায়ে এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন যে তার ফুসফুস মাত্র ১০ শতাংশ কার্যক্ষম ছিল।

বেশিরভাগ রোগী সুস্থ হয়ে উঠলেও মৃত্যুর খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন এই পাইলট। তার শরীরিক অবস্থা পুরো দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। এমনকি, তাকে বাঁচাতে অনেকে ফুসফুস পর্যন্ত দান করতে এগিয়ে এসেছিলেন। যদিও চিকিৎসকরা সাফ জানিয়ে দেন, সেরকম প্রয়োজনে একমাত্র ‘ক্লিনিক্যাল ডেড’ ব্যক্তির ফুসফুস গ্রহণ করা হবে।

শেষপর্যন্ত অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়েনি। চিকিৎসকদের দিন-রাত এক করে করা সেবায় সুস্থ হয়ে উঠতে শুরু করেন ক্যামেরন। জুনে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়।

শনিবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান। হাসপাতাল ছাড়ার সময় হুইলচেয়ারে বসা ক্যামেরনকে চিকিৎসকরা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। শিগগিরই বিশেষ বিমানে করে তাকে দেশে পাঠানো হবে। তার সঙ্গে বিমানে চিকিৎসকরাও থাকবেন বলে জানিয়েছে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা।

ক্যামেরনের চিকিৎসায় দুই লাখ মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থ ব্যয় করেছে দেশটি।

হাসপাতাল ছাড়ার সময় কৃতজ্ঞ ক্যামেরন বলেন, ‘‘আমার হয়তো এখানে থাকার কথাই ছিল না। যারা এ অসাধ্য সাধন করেছেন তাদের শুধুমাত্র ধন্যবাদ বলতে পারি।”

দ্রুত সুস্থ হয়ে কাজে ফিরবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি এখনো একজন পাইলট। শুধু আমার লাইসেন্সটা স্থগিত হয়েছে, এই যা।”