‘মুসলিম নিপীড়নে’ ৪ চীনা কর্মকর্তার উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

চীন শিনজিয়াং প্রদেশে সংখ্যালঘু মুসলমানদের মানবাধিকার লংঘন করছে অভিযোগ করে ৪ চীনা কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2020, 06:10 AM
Updated : 10 July 2020, 07:04 PM

পশ্চিমা মানবাধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরেই বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে উইঘুর ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অসংখ্য মানুষকে আটক, ধর্মীয় নিপীড়ন করাসহ নারীদেরকে জোর করে বন্ধ্যা করানোর অভিযোগ করে আসছে।

চীন শুরু থেকেই শিনজিয়াংয়ে মুসলিমদের উপর নির্যাতন ও নিপীড়নের সব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

সমালোচকদের অনুমান, শিনজিয়াং কর্তৃপক্ষ তাদের পুনঃশিক্ষা কর্মসূচির নামে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে লাখ লাখ সংখ্যালঘু মুসলমানকে বিভিন্ন ক্যাম্পে আটক করে তাদের উপর ধর্মীয় নিপীড়ন চালিয়ে আসছে ও নানা হয়রানি করছে।

অন্যদিকে, বেইজিং বলছে, এসব ক্যাম্পে আগতদের যে ‘বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ’ দেওয়া হচ্ছে, তা শিনজিয়াংয়ে উগ্রবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদ মোকাবেলার জন্য জরুরি।

বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় যে ৪ চীনা কর্মকর্তার নাম এসেছে তাদের মধ্যে আছেন চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) পলিটব্যুরোর সদস্য চেন কাংগুয়ো।

শিনজিয়াংয়ে সিপিসি’র এ শীর্ষ নেতাকে বেইজিংয়ের সংখ্যালঘু নীতির স্থপতি বলে বিবেচনা করা হয়। চেন এর আগে তিব্বতেরও দায়িত্বে ছিলেন।

শিনজিয়াং জননিরাপত্তা ব্যুরোর পরিচালক ওয়াং মিংশান, শিনজিয়াংয়ে সিপিসি’র অন্যতম প্রভাবশালী সদস্য জু হাইলুন এবং সাবেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা হুয়ো লিউজুনের উপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন।

মার্কিন প্রশাসনের নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এ ৪ চীনা কর্মকর্তার সঙ্গে কোনও লেনদেন করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। যুক্তরাষ্ট্রে এ কর্মকর্তাদের কোনও সম্পদ থাকলে এখন তাও জব্দ করা যাবে।

বিবিসি জানিয়েছে, হুয়ো বাদে বাকি তিন চীনা কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এ ৪ কর্মকর্তার পাশাপাশি ওয়াশিংটন শিনজিয়াংয়ের নিরাপত্তা ব্যুরোর উপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, শিনজিয়াংয়ে যে ‘ভয়াবহ ও ধারাবাহিক নিপীড়ন’ চলছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই যুক্তরাষ্ট্রের এ নিষেধাজ্ঞা।

“চীনের কমিউনিস্ট পার্টি যেভাবে উইঘুর, কাজাখ নৃগোষ্ঠী ও শিনজিয়াংয়ের অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের মানবাধিকার লংঘন করছে, তা চুপচাপ দেখে যেতে পারে না যুক্তরাষ্ট্র,” বিবৃতিতে এমনটাই বলেছেন পম্পেও।

মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস, বাণিজ্য চুক্তি ও হংকং নিয়ে দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে ওয়াশিংটন চীনা কর্মকর্তাদের উপর এ নিষেধাজ্ঞা দিলেও তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে বেইজিংয়ের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।