যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মেলানিয়ার ভাস্কর্যে আগুন

স্লোভেনিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের একটি কিম্ভূতকিমাকার ভাস্কর্য পুড়িয়ে দেয়ার পর সেটির ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 July 2020, 10:28 AM
Updated : 9 July 2020, 10:28 AM

মেলানিয়া স্লোভেনিয়ার যে শহরে বেড়ে উঠেছিলেন, তার কাছেই কাঠের ওই ভাস্কর্যটি বসিয়েছিলেন মার্কিন শিল্পী ব্র্যাড ডাউনি।

তিনি জানান, ৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসের দিনেই ভাস্কর্যটিতে আগুন দেওয়া হয়েছিল। কে বা কারা এটিতে আগুন দিয়েছে তা জানা যায়নি।

পরদিন ডাউনি নিজেই পুড়ে যাওয়া ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।  

ঘটনাটির তদন্ত শুরু হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে স্লোভেনিয়ার পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

গাছের কাণ্ডের উপর খোদাই করা মেলানিয়ার এ অদ্ভূত ভাস্কর্যটি বসানো হয়েছিল সেভনিচার উপকণ্ঠে; স্লোভেনিয়ার এ শহরেই শৈশব ও কৈশোর কেটেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বর্তমান স্ত্রী মেলানিয়ার।

ভাস্কর্যটিতে মেলানিয়ার পরনে ছিল নীল রংয়ের কোট; একই রকমের একটি কোট পরেই ২০১৭ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন।

গত বছরের জুলাই মাসে স্থাপিত মেলানিয়ার এ কাঠের ভাস্কর্যটি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছিল বলে জানিয়েছে বিবিসি।

মার্কিন ফার্স্ট লেডির চেয়েও ভাস্কর্যটির সঙ্গে অ্যানিমেশন ফিল্ম স্মার্ফের চরিত্র স্মার্ফেতের বেশি সাদৃশ্য থাকায় অনেকে এটিকে ‘অপমানজনক’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছেন।

কারা, কী কারণে ভাস্কর্যটিতে আগুন দিয়েছে তা বুঝতে চাইছেন ডাউনি। যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি নিয়ে বিতর্কসহ সেখানকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার দ্বার উন্মোচন করবে এ আশা থেকে মেলানিয়ার ভাস্কর্যটি বসানো হয়েছিল বলেও দাবি করেন তিনি।

বিবিসি বলছে, এমন এক সময়ে স্লোভেনিয়ায় মার্কিন ফার্স্ট লেডির ভাস্কর্যটি হামলার শিকার হল, যখন বর্ণবাদবিরোধী প্রতিবাদ কর্মসূচি ও বিক্ষোভের ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে দাস ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রাজনীতিক ও ঐতিহাসিক ব্যক্তিদের ভাস্কর্য এবং স্মারকের উপর ধারাবাহিক আক্রমণ চলছে। 

৪ জুলাইয়ের স্বাধীনতা দিবসের ভাষণসহ সম্প্রতি দেয়া একাধিক ভাষণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও যুক্তরাষ্ট্রে মূর্তি ও ভাস্কর্য উপড়াতে চেষ্টা করা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের পর থেকেই সেভনিচা স্লোভেনিয়ায় যাওয়া পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্যস্থলে পরিণত হয়। ভ্রমণকারীরা এখানে এসে ট্রাম্পপত্নীর জীবনের শুরুর বছরগুলোর খোঁজ নিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সেভনিচার বাসিন্দারাও মেলানিয়া ও ট্রাম্পকে ব্র্যান্ড বানিয়ে স্লিপার, কেক, বার্গারসহ নানান পণ্য বিক্রি করে আয় বাড়িয়ে নিচ্ছে।

গত বছরের অগাস্টে স্লোভেনিয়ার রাজধানী লুবলিয়ানার পূর্ব অংশে ট্রাম্পেরও একটি কাঠের ভাস্কর্য বসানো হয়েছিল; সেভনিচায় মেলানিয়ার ভাস্কর্যটির মত মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ মূর্তি ঘিরেও শুরু হয়েছিল ব্যাপক সমালোচনা।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে অজ্ঞাত অগ্নিসংযোগকারীরা ট্রাম্পের ২৬ ফুট উঁচু ওই ভাস্কর্যটিকেও ছাইয়ে পরিণত করেছিল।