ভারতে গ্যাস লিকের ঘটনায় দক্ষিণ কোরীয় সিইওসহ গ্রেপ্তার ১২

ভারতে কেমিক্যাল প্ল্যান্ট থেকে বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস ছড়িয়ে ১২ জনের মৃত্যুর ঘটনার দুই মাস পর এলজি পলিমারের ১২ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2020, 10:10 AM
Updated : 8 July 2020, 10:10 AM

গ্রেপ্তারদের মধ্যে কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী দক্ষিণ কোরীয় নাগরিক সাঙ্কি জেঙও রয়েছেন বলে বুধবার জানিয়েছেন ভারতীয় কর্মকর্তারা।

দক্ষিণ কোরীয় এলজি কেমিক্যাল লিমিটেডের অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপত্তম ইউনিট থেকে ৭ মে স্থানীয় সময় ভোররাতে বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। ১২ জনের মৃত্যু হওয়া ছাড়াও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় আরো শত শত মানুষ।

বিশাখাপত্তমের পুলিশ কমিশনার রাজিব কুমার মীনা জানান, কোম্পানির বিরুদ্ধে দায়ের করা গাফিলতিজনিত হত্যার মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

তিনি বলেন, “মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিইও ও দুই পরিচালকসহ মোট ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।”

গ্রেপ্তার দুই পরিচালকের মধ্যেও একজন দক্ষিণ কোরীয় নাগরিক আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

তাদের কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলে এ বিষয়ে তাদের ‘কোনো বক্তব্য নেই’ বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে পাঠানো এক ইমেইলে জানিয়েছে এলজি পলিমার।

তাদের ওই কেমিক্যাল কারখানা থেকে ছড়িয়ে পড়া বিষাক্ত স্টাইরিন গ্যাসে ঘুমন্ত লোকজন দম বন্ধ হয়ে মারা যান।

দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে স্থানীয় সরকার নিযুক্ত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরের দিন এলজি পলিমারের ওই কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করা হয়, প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) জানিয়েছেন মীনা।

তদন্ত প্রতিবেদনে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে একাধিক গাফিলতির অভিযোগ করা হয়েছে। নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা না করারও প্রমাণ পেয়েছে কমিটি। এলজি পলিমারের ওয়ার্নিং সিস্টেমও অকেজো ছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। 

কমিটির সুপারিশে কারখানাটি জনবসতি এলাকা থেকে সরিয়ে নেয়ার কথাও বলা হয়েছে।

আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে গ্রেপ্তারদের সর্বোচ্চ আট বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ কর্মকর্তা মীনা। 

১৯৬১ সালে ওই কারখানা যখন চালু হয়, তখন এর নাম ছিল হিন্দুস্তান পলিমারস। পরে ১৯৯৭ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার এলজি কেমিক্যালস তা অধিগ্রহণ করে। তখন এর নাম হয় এলজি পলিমারস ইন্ডিয়া।

বিবিসি লিখেছে, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত ২৪ মার্চ ভারতে লকডাউন শুরু হলে এলজির ওই কারখানাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। লকডাউন শিথিল হওয়ায় ৭ মে রাতেই প্ল্যান্ট খোলার প্রস্তুতি শুরু হয়। তখনই গ্যাস লিকেজ ঘটে।