লকডাউনের পর প্রথম ‘মুক্ত’ রাত ইংল্যান্ডে

করোনভাইরাসজনিত বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় তিন মাস পর প্রথমবারের মতো রাতে বাইরে থাকার সুযোগ পেয়েছে ইংল্যান্ডবাসী।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 July 2020, 07:04 AM
Updated : 5 July 2020, 07:04 AM

কঠোর সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে শনিবার পানশালা, রেস্তোরাঁর পাশাপাশি সেলুন, সিনেমা হল ও থিম পার্কগুলো খোলা হয়। 

বিবিসি জানিয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠান খুললেও মন্ত্রীরা সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন; ইংল্যান্ডের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা লকডাউন শিথিলের সর্বশেষ এই পদক্ষেপ ‘ঝুঁকি মুক্ত’ নয় বলে মন্তব্য করেছেন।

ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনে এ রাতে ইংল্যান্ডজুড়ে বিভিন্ন ভবন ও স্থাপনাগুলো নীল আলোতে আলোকিত করা হয়।

করোনাভাইরাসে যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের স্মরণে লোকজনকে তাদের জানালাগুলোতে আলো জ্বালিয়ে রাখতে উৎসাহিত করা হয়। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও বাসভবন ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট নীল আলোতে উদ্ভাসিত ছিল। এর পাশাপাশি রয়েল আলবার্ট হল, ব্ল্যাকপুল টাওয়ার, শাড ও ওয়েমব্লি আর্চও নীল আলোতে আলোকিত ছিল।  

ইংল্যান্ডে শিথিল করা হলেও স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসে সেবা খাতের ওপর বিধিনিষেধ বহাল আছে। উত্তর আয়ারল্যান্ডে শুক্রবার থেকেই পানশালা খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

লকডাউন শিথিল হওয়ার পর এদিন প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বাসিন্দারা রাতে বাড়ির বাইরে থাকার অনুমতি পান। ক্যাম্পসাইট ও ছুটি উদযাপনের স্থানগুলোও ফের খোলা হয়। 

ঘর থেকে বের হওয়া লোকজনের স্রোতে রাস্তাগুলোতে জ্যাম লেগে গিয়েছিল বলে ডোরসেট, ডেভন ও কর্নওয়ালের পুলিশ জানিয়েছে। এদের মধ্যে উপকূলমুখি মানুষের গাড়ির ভিড়ও উল্লেখযোগ্য ছিল।

বিধিনিষেধ শিথিল করার পরও ইংল্যান্ডের ৩০ শতাংশ বার, পানশালা ও রেস্তোরাঁ বন্ধ ছিল বলে জানিয়েছে নাইট-টাইম ইন্ডাষ্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন। সামাজিক যোগাযোগ দূরত্ব বিধির প্রয়োগ নিয়ে উদ্বেগ ও সুরক্ষা নিয়ে শঙ্কার কারণে এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয় বলে জানিয়েছে তারা।

অনেকেই তিন মাস পর পানশালায় বসে পান করার আনন্দ উপভোগ করেছেন।

তাদের একজন বিবিসিকে বলেন, “পরিবেশটা একটু অন্যরকম, তবে এটি প্রত্যাশিত। প্রত্যেকেই ভালো সময় কাটাচ্ছে।”

তবে লকডাউনের আগের পরিস্থিতি যেমন ছিল শনিবারের সন্ধ্যাটা মোটেই তেমনটা ছিল না। ক্রেতারা আগেই টেবিল বুক করে রাখবেন এমনটাই প্রত্যাশিত ছিল, এরপর সরাসরি উপস্থিত হয়ে তাদের বিস্তারিত তথ্য নথিবদ্ধ করে সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টা পর্যন্ত অবস্থানের সুযোগ পেয়েছেন।

শনিবার থেকে কার্যকর হওয়া অন্যান্য বিধির মধ্যে ছিল, দুটি পরিবারের লোকজন বাড়ির ভিতরে বা বাইরে মিলিত হতে পারবেন, রাতেও বাইরে অবস্থান করতে পারবেন –তবে তাদের সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলতে হবে। 

ইংল্যান্ডের বাসিন্দাদের এখনও পরস্পরের থেকে দুই মিটার দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা যদি মুখ ঢেকে পরস্পরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এবং মুখোমুখি না বসে তাহলে দুই মিটারের চেয়ে কম কিন্তু এক মিটারের চেয়ে বেশি দূরত্ব বজায় রাখতে পারবে বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে।

বিধিনিষেধ শিথিল করা হলেও যুক্তরাজ্যজুড়ে মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ এড়ানোর জন্য ধারাবাহিকভাবে লোকজনকে সতর্ক করে যাচ্ছেন সরকারি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

শনিবার প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যজুড়ে আরও ৬৭ জন কোভিড-১৯ রোগী মারা গেছেন; এতে দেশটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৪৪ হাজার ১৯৮ জনে দাঁড়িয়েছে।