হংকংয়ে নতুন নিরাপত্তা আইনে ধরপাকড় শুরু

হংকংয়ে চীনের জাতীয় নিরাপত্তা আইন চালুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস, জলকামান ব্যবহার করাসহ নতুন এ আইনের আওতায় ধরপাকড় শুরু করেছে।

>>রয়টার্স
Published : 1 July 2020, 11:20 AM
Updated : 1 July 2020, 03:02 PM

বুধবার (১ জুলাই) হংকংয়ে আইনটি কার্যকর হওয়ার প্রথমদিন হাজার হাজার মানুষ জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে বিক্ষোভে নামায় পুলিশ ৩ শতাধিক জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

নিরাপত্তা আইন ভঙ্গের অভিযোগে আটক করা হয়েছে ৯ জনকে। এর মধ্যে রয়েছে হংকংয়ের স্বাধীনতার পক্ষের পতাকা বহনকারী এক ব্যক্তিও।

ব্রিটিশ শাসন থেকে হংকংকে চীনের কাছে হস্তান্তরের ২৩তম বার্ষিকীতে বুধবার বিক্ষোভকারীরা হংকংয়ের স্বাধীনতা এবং শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার স্লোগান দিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভে নামলে পুলিশ তাদের ওপর মরিচের গুঁড়ার স্প্রে এবং ছররা গুলি ছুড়ে হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।

মঙ্গলবার চীনের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের স্ট্যান্ডিং কমিটির ১৬২ জন সদস্যের সম্মতিতে নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন পাস হয়েছে।

এ আইনের আওতায় হংকংয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদ, কর্তৃপক্ষকে অবমাননা, সন্ত্রাসবাদ ও জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করতে বিদেশি বাহিনীর সঙ্গে আঁতাঁত নিষিদ্ধ করাসহ এ ধরনের অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান করা হয়েছে।

আইনটির বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে চীনের প্রকাশিত নথিতে দেখা গেছে, জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরুতর অপরাধের জন্য বিচারে অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে এ আইনে।

হংকং সরকার মঙ্গলবার রাত থেকেই আইনটি কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছিল। আইনটিকে হংকংয়ের বিশেষ স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতার জন্য হুমকি হিসেবে বর্ণনা করে আসছেন গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকর্মীরা।

আইনের প্রতিবাদে রাস্তায় নামা ৩৫ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারীর কথায়, “আমার জেলে যাওয়ার ভয় আছে। কিন্তু ন্যায়বিচারের জন্য আজ আমাকে রাস্তায় নামতে হয়েছে।”

বুধবার বিক্ষোভের সময় পুলিশ প্রথম এক বার্তায় নতুন আইনের আওতায় অপরাধ সংঘটনের ব্যাপারে বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করেছে।

জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরানোরও চেষ্টা চালায়।পরে পুলিশ জানায়, তারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিক্ষোভ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য ৩ শতাধিক জন এবং নতুন নিরাপত্তা আইন ভঙ্গের জন্য ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

টুইটারে আহত এক পুলিশ কর্মকর্তার ছবিও পোস্ট করেছে পুলিশ। বলা হচ্ছে, ওই কর্মকর্তা বিক্ষোভকারীদের ছুরির আঘাতে আহত হয়েছেন।

গতবছর থেকেই হংকংয়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে অস্থিরতা চলছে। সন্দেহভাজন অপরাধীদের হংকং থেকে চীনের মূল ভূখণ্ডে প্রত্যর্পণের সুযোগ রেখে করা একটি বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের শুরু।

বিক্ষোভের মুখে হংকং এর নেতা ক্যারি লাম শেষ পর্যন্ত বিলটি মৃত ঘোষণা করা এবং প্রত্যাহারের পরও আন্দোলন থামেনি। হংকংবাসীরা আরো অনেক দাবী নিয়ে বিক্ষোভ চালাতে থাকে।

এরপর আন্দোলন কিছুটা থিতিয়ে এলেও ছয়সপ্তাহ আগে চীন প্রথম নতুন নিরাপত্তা আইন চালুর পরিকল্পনা ঘোষণা করার পর আবার শুরু হয় অস্থিরতা।

গতমাসেও হংকংয়ে চীনের সরাসরি এই নিরাপত্তা আইন চালুর পরিকল্পনার প্রতিবাদে বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে।