চীনের হংকং নিরাপত্তা আইন পাস নিয়ে ক্ষোভ, উদ্বেগ
নিউজ ডেস্ক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 30 Jun 2020 10:02 PM BdST Updated: 30 Jun 2020 11:33 PM BdST
চীনের হংকং নিরাপত্তা আইন পাসের নিন্দা-সমালোচনা করেছে যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং নেটো।
Related Stories
তারা চীনের এ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এ আইন হংকংয়ের ‘এক দেশ দুই ব্যবস্থা’ কে হুমকির মুখে ফেলেছে এবং অঞ্চলটির স্বায়ত্তশাসন খর্ব করছে।
বিবিসি জানায়, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আইনটিতে সই করেছেন। এটি হংকংয়ের মিনি-সংবিধানে সংযোজন করা হবে।
এ আইনের আওতায় হংকংয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদ, কর্তৃপক্ষকে অবমাননা, সন্ত্রাসবাদ ও জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করতে বিদেশি বাহিনীর সঙ্গে আঁতাঁত নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং এ ধরনের অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান করা হয়েছে।
আইনটিকে হংকংয়ের বিশেষ স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতার জন্য হুমকি হিসেবে বর্ণনা করে আসছেন গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকর্মীরা।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া কী?
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব চীনকে এ পথ থেকে সরে এসে হংকংয়ের জনগণের অধিকারকে সম্মান দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল বলেছেন, “চীনের এ পদক্ষেপে হংকংয়ের উচ্চমাত্রার স্বায়ত্তশাসন মারাত্মকভাবে খর্ব হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে।”
“এতে বিচারবিভাগ এবং আইনের শাসনে ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। আমরা এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানাচ্ছি।”
হংকংয়ে যুক্তরাজ্যের সর্বশেষ গভর্নর লর্ড প্যাটেন বলেছেন, চীনের নিরাপত্তা আইন স্পষ্টতই ‘এক দেশ দুই ব্যবস্থার’ অবসান।
নেটো মহাসচিব ইয়ান স্টোলটেনবার্গ বলেছেন, “চীন যে আমাদের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা এবং আইনের শাসনের মূল্যবোধ ধারণ করে না তা স্পষ্ট। হংকংয়ে আমরা সেটিই দেখতে পাচ্ছি। যেখানে এই নতুন নিরাপত্তা আইন তাদের স্বায়ত্তশাসন খর্ব করছে।”
চীনের পদক্ষেপকে ‘দুঃখজনক’ আখ্যা দিয়েছে জাপান। ওদিকে, তাইওয়ান তাদের নাগরিকদেরকে হংকং ভ্রমণের ঝুঁকির ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে হংকং নিরাপত্তা আইনের জবাবে চীনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে এবং হংকংয়ের বিশেষ বাণিজ্য মর্যাদার অবসান ঘটানোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।
চীনের ভাষ্য:
চীন বলছে, গতবছর টানা কয়েকমাস ধরে সরকারবিরোধী আন্দোলন ও সহিংসতা উত্তাল হংকং পরিস্থিতিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন, বৈধ সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা, সন্ত্রাসবাদ ও বিদেশি হস্তক্ষেপ রুখতে এ নিরাপত্তা আইন চালু করা জরুরি হয়ে পড়েছিল।
অস্থিরতা প্রশমন এবং ব্যাপক গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনের ক্ষেত্রে অস্থিতিশীলতা সামাল দিতেই এ আইন প্রয়োজন। হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসনের জন্যও আইনটি হুমকি নয় বলে দাবি চীনের।
হংকংয়ের ‘বেসিক ল’ অর্থাৎ, মিনি সংবিধানের আর্টিকেল ২৩ অনুযায়ী, চীন সরকারের বিরুদ্ধে কোনোরকম বিদ্রোহ প্রতিহত করতে এই জাতীয় নিরাপত্তা আইন চালুর বিধান আছে।
কিন্তু এতে মানবাধিকার এবং বাক স্বাধীনতার মতো অধিকারগুলো ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশঙ্কার কারণে এতদিন আইনটি সেখানে বাস্তবায়ন করা না হলেও এবার চীন সে উদ্যোগ নিয়েছে।
গত ২৮ মে স্বায়ত্তশাসিত হংকংয়ে সরাসরি জাতীয় নিরাপত্তা আইন জারি করার প্রস্তাব অনুমোদন করে চীনের পার্লামেন্ট।
এরপর অনেক বিতর্ক-প্রতিবাদের মধ্যেও মঙ্গলবার চীনের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের স্ট্যান্ডিং কমিটির ১৬২ জন সদস্যের সম্মতিতে আইনটি পাস হল। ১ জুলাই থেকে এ আইন কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
চীনের পার্লামেন্টে পাস হওয়ার আগে এ আইনের কোনও খসড়া প্রকাশ্যে আনা হয়নি। ফলে এ আইনে কী ধরনের বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হবে সেটি এখনও স্পষ্ট নয়। মঙ্গলবারই আইনটি স্পষ্ট করে জানানোর কথা রয়েছে বেইজিংয়ের।
হংকং সরকারের ভাষ্য:
হংকংয়ের নেতা ক্যারি লাম চীনের এই নিরাপত্তা আইনের পক্ষ সমর্থনে কথা বলছেন। তার কথায়, আইনটি জাতীয় নিরাপত্তায় বড় ধরনের ফাঁক পূরণ করেছে।
হংকং সরকার এক বিবৃতিতে মঙ্গলবার রাত থেকেই আইনটি কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে।
নেতা ক্যারি লাম জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে এক ভিডিও বার্তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “আমাদের দেশের জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখার অধিকারকে সম্মান করুন।”
এ আইনে হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসন কিংবা বিচারবিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন হবে না বলেও তিনি দাবি করেছেন।
সবশেষে এ পয়েন্টটা যোগ করে দেন। তারপর বডির ভেতরের ছবিটা এটার ওপরে বসিয়ে দিয়েন:
হংকংয়ে প্রতিক্রিয়া:
চীনের নিরাপত্তা আইন চালুর খবরে হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থিরা প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে। সেইসঙ্গে মানুষের মধ্যে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগও সৃষ্টি হয়েছে।
গণতন্ত্রপন্থি এক আন্দোলনকর্মী জোশুয়া ওং এর কথায়, “বিশ্ব যে হংকং কে চিনত তার আবসানই নির্দেশ করছে এ আইন।”
ডেমোক্রেটিক পার্টি নেতা উ চি-ওয়াই ব্রিটিশ শাসন থেকে হংকংকে চীনের কাছে হস্তান্তরের ২৩তম বার্ষিকীতে বুধবার নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে পদযাত্রায় নামার ঘোষণা দিয়েছেন।
সিভিল হিউম্যান রাইটস ফ্রন্টের প্রতিবাদের ডাকে সাড়া দিয়ে তাদের সঙ্গে সামিল হবেন বলে জানান উ। এ পথে ঝুঁকি আছে জেনেও আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া এবং হংকংবাসীকে ভয় না পাওয়ার বার্তা দিতে চান বলে জানান তিনি।
-
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপে ছড়াচ্ছে বিরল রোগ মাঙ্কিপক্স
-
টেলিভিশনে নারী উপস্থাপকদের মুখ ঢাকার নির্দেশ তালেবানের
-
শ্রীলঙ্কার গ্যাস, জ্বালানির ঘাটতি ‘কমার পথে’
-
মারিউপোলে আত্মসমর্পণ করা ইউক্রেইনী সেনাদের ভাগ্যে কী আছে?
-
কেন মারাত্মক বিদ্যুৎ সংকটে ভারত?
-
৩৪ বছর আগের মামলায় নভজোৎ সিধুর কারাদণ্ড
-
সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার জনগণের আস্থা অর্জনে চোখ ভারতের
-
ইউক্রেইন যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের কারণ হতে পারে: জাতিসংঘ
সর্বাধিক পঠিত
- তাইজুলের দারুণ লড়াইয়ের পরও ড্র চট্টগ্রাম টেস্ট
- ‘বাংলাদেশে আসলে অভিজ্ঞতার দাম নেই’
- ‘দল আমার কাছে অনেক কিছু চায়, আমাকে মূল্যবান মনে করে’
- ডলারের তেজ খানিকটা কমল
- ‘পোশাকে আপত্তি তুলে’ তরুণী লাঞ্ছিত নরসিংদী স্টেশনে
- ‘সালিশে ক্ষুব্ধ’: চেয়ারম্যানের ছেলেকে ‘হত্যার পর আত্মহত্যা’
- একুশের গানের রচয়িতা আবদুল গাফফার চৌধুরীর চিরবিদায়
- উল্টে যাওয়া কভার্ডভ্যান সরাতে ৬ ঘণ্টা, ব্যাপক যানজট
- শেষের নাটকীয়তায় হেরে কলকাতার বিদায়
- রেঞ্জার্সের অপেক্ষা বাড়িয়ে ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়ন আইনট্রাখট