উইঘুরদের জন্মনিয়ন্ত্রণে বাধ্য করছে চীন

চীনে নির্যাতনের শিকার উইঘুর মুসলিমদের জনসংখ্যা বাড়তে না দেওয়ার জন্য এবার তাদেরকে জন্মনিয়ন্ত্রণে বাধ্য করছে সরকার।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 June 2020, 12:49 PM
Updated : 30 June 2020, 12:49 PM

শিনজাংয়ে উইঘুর নারীদের জোর করে স্টেরিলাইজ করা হচ্ছে বা গর্ভনিরোধক যন্ত্র স্থাপন করা হচ্ছে। নতুন গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।

বিবিসি জানায়, চীনা পণ্ডিত এড্রিয়ান জেনজ এ গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।

চীনের আঞ্চলিক সরকারি উপাত্ত, নীতিমালা বিষয়ক নথিপত্র এবং শিনজাংয়ের জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নারীদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর শিনজাং পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ তদন্তের আন্তর্জাতিক আহ্বান এসেছে।

প্রতিবেদনে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, উইঘুর ও অন্যান্য সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর নারীরা গর্ভপাত ঘটাতে রাজি না হলে তাদেরকে বন্দিশিবিরে আটকে রাখার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।এভাবে তাদেরকে শিশু জন্মদানের কোটা মেনে চলতে বাধ্য করা হচ্ছে।

এমনকী দুটি সন্তান নেওয়ার বৈধতা থাকার পরও কোনো নারী একের বেশি সন্তান নেওয়ার চেষ্টা করলে তাকে স্টেরিলাইজেশন সার্জারি করানো হচ্ছে কিংবা তাদের গর্ভাশয়ে ইন্ট্রা-ইউটেরিন ডিভাইস (আইইউডি) স্থাপন করা হচ্ছে।

জেনজ তার প্রতিবেদনে উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বলেছেন,শিনজাংয়ে সম্প্রতি কয়েক বছরে স্বাভাবিক জনসংখ্যা বৃদ্ধি নাটকীয়ভাবে কমেছে।

২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে উইঘুরদের সবচেয়ে বড় দুটি এলাকায় জনসংখ্যাবৃদ্ধির হার ৮৪ শতাংশ কমে গেছে। ২০১৯ সালে তা আরও কমেছে।

এ হারে জনসংখ্যা কমে যাওয়া ‘নজিরবিহীন’। এর মধ্য দিয়ে উইঘুরদের দমিয়ে রাখতে তাদের ওপর ব্যাপক নিয়ন্ত্রণ আরোপের রূঢ় বাস্তবতারই প্রকাশ ঘটেছে বলে উল্লেখ করেছেন জেনজ।

শিনজাংয়ে বন্দিশিবিরে আটকে রাখা হয়েছিল এমন কয়েকজন জানিয়েছেন, তাদেরকে ঋতুস্রাব বন্ধের জন্য ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল।

সামগ্রিকভাবে শিনজাং কর্তৃপক্ষ তিন বা তার বেশি সন্তান থাকা নারীদের গণহারে স্টেরিলাইজ করানোর কর্মসূচি নিয়েছে বলে ধারণা প্রকাশ করা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে।

চীন প্রতিবেদনের সব অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তবে উইঘুরদেরকে বন্দিশিবিরে আটকে রাখার জন্য শিনজাং রাজ্য এরই মধ্যে ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছে।

চীনে উইঘুর এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু বিশেষত, মুসলিম জাতিগোষ্ঠীর প্রায় ১০ লাখ মানুষকে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

চীন এর আগে বন্দিশিবিরের অস্তিত্বই অস্বীকার করেছিল।পরে তারা এসব শিবিরের কথা জানায় এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হিসাবে এগুলো স্থাপন করা হয়েছে বলে সাফাই দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও চীনকে অবিলম্বে এ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। চীনে সংখ্যালঘুদের ওপর এ নির্যাতন বন্ধের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিশ্বের অন্য সব দেশকেও একজোট হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।