নীল নদের বাঁধ নিয়ে চুক্তিতে সম্মত মিশর, ইথিওপিয়া ও সুদান

নীল নদের বাঁধের জলাধার পানিতে ‍পূর্ণ করা নিয়ে দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে একটি চুক্তি করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে মিশর, ইথিওপিয়া ও সুদান।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 June 2020, 12:33 PM
Updated : 27 June 2020, 12:38 PM

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, নদীটির পানি সরবরাহ নিয়ে দশক-পুরনো বিরোধ চুক্তির মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলার ক্ষেত্রে আফ্রিকান ইউনিয়ন মধ্যস্থতা করেছে।

নীল নদ থেকে মিশরের পানি সরবরাহকে সুরক্ষিত রেখে কীভাবে ইথিওপিয়া জলাধারটি পূর্ণ করে তাদের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি পরিচালনা করবে, তা নিয়ে কয়েক বছর ধরে এই তিনটি দেশের মধ্যে আলোচনা চললেও কোনো সুরাহা হচ্ছিল না। 

শ্বেত নীল নদ ও নীলাভ নীল নদ নামের দুই উপনদী সুদানের রাজধানী খার্তুমের কাছে মিলিত হয়ে নীল নদ নামে প্রবাহিত হয়েছে। সুদান থেকে মিশরের ভিতর দিয়ে নদটি ভূমধ্যসাগরে গিয়ে পড়েছে।

সুদানের সীমান্ত থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে নীলাভ নীল নদের ওপর ‘দ্য গ্রান্ড ইথিওপিয়ান রেনেসান্স ড্যাম (জিইআরডি)’ তৈরি করা হচ্ছে। এই উপনদীটিই নীলের পানির প্রধান উৎস আর এর উৎপত্তি ইথিওপিয়ায়।

শনিবার ইথিওপিয়ার পানিমন্ত্রী সেলেশি বিকেলে জানিয়েছেন, দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করার বিষয়ে তিন দেশের মধ্যে মতৈক্য হয়েছে।

আফ্রিকান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসাসহ ওই তিন দেশের নেতাদের মধ্যে এক অনলাইন শীর্ষ বৈঠকের একদিন পর তিনি একথা জানান।

চারশ কোটি ডলারের এ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি থেকে ছয় হাজার ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে এবং এ প্রকল্পটি তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য বলে জানিয়ে আসছে ইথিওপিয়া। অপরদিকে নীল নদ মিশরের প্রয়োজনীয় মিঠা পানির ৯০ শতাংশের যোগান দেয়।  

এক বিবৃতিতে ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর জানিয়েছে, নীল নদ ও গ্রান্ড রেনেসান্স বাঁধ ‘আফ্রিকার ইস্যু আর এর সমাধান অবশ্যই আফ্রিকা থেকে আসবে’ বলে এই তিনটি দেশ একমত হয়েছে।

চুক্তিতে জলাধার পানিতে পূর্ণ করার কাজ পিছিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। এতে আলোচনায় কয়েক মাস ধরে যে অচলাবস্থা বিরাজ করছিল তার অবসান হয়েছে।

ইথিওপিয়ার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সন্ধিস্থাপনের আলোচনায় এই তিনটি দেশকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ নয়, আফ্রিকান ইউনিয়ন সহায়তা করবে এবং প্রায়োগিক সমর্থন দিবে।

ইথিওপিয়াকে বাঁধের জলাধার পূর্ণ করা থেকে থামাতে শেষ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা হিসেবে মিশর নিরাপত্তা পরিষদের কাছে আবেদন জানিয়েছিল। মিশরের এই আবেদনের প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বিষয়টি নিয়ে সোমবার বৈঠকে বসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।