ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব দরিদ্রদের মাদকের ঝুঁকিতে ফেলছে: জাতিসংঘ

করোনাভাইস মহামারীতে বিশ্বজুড়ে বেকারত্ব বাড়তে থাকায় এবং কাজের সুযোগ কমে আসায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দরিদ্র জনগোষ্ঠী, আর এই পরিস্থিতি তাদের মাদক সেবন, পাচার ও উৎপাদনে যুক্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে বলে মনে করছে জাতিসংঘ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 June 2020, 03:11 PM
Updated : 25 June 2020, 03:11 PM

ইউনাইটেড নেশনস অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম বৃহস্পতিবার তাদের বার্ষিক প্রতিবেদন ‘ওয়ার্ল্ড ড্রাগ রিপোর্ট’ এ বলেছে, ২০১৮ সালে বিশ্বজুড়ে মোটামুটি ২৬ কোটি ৯০ লাখ মানুষ মাদক সেবন করত, যা ২০০৯ সালের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি।

২০১৮ সালে বিশ্বের সাড়ে তিন কোটি মানুষ মাদকের অপব্যবহারজনিত বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগেছে বলেও তথ্য দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।

বিশ্বজুড়ে চলমান করোনাভাইরাস মহামারীর কী প্রভাব মাদকের কারবারে পড়ছে, তাও বোঝার চেষ্টা করেছে ইউনাইটেড নেশনস অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম-ইউএনওডিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভাইরাস রুখতে সীমান্তে কড়াকড়িসহ যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তাতে রাস্তায় মাদকবিক্রি কমে এসেছে। ফলে এক দিকে মাদকের দাম বেড়ে গেছে, অন্যদিকে ভেজালের পরিমাণ বেড়েছে।

ইউএনওডিসির নির্বাহী পরিচালক ঘাদা ওয়ালি বলেন, “মাদক সমস্যার জন্য বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মূল্য দিতে হয় তরুণ, নারী, দরিদ্র এবং ঝুঁকিতে থাকা ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে। চলমান কোভিড-১৯ সঙ্কট এবং অর্থনৈতিক মন্দা মাদকের এই বিপদকে আরও জটিল দিকে নিয়ে যাওয়ার হুমকি তৈরি করছে, যখন আমাদের স্বাস্থ্য খাত ও সামাজিক ব্যবস্থা এমনিতেই নাজুক অবস্থায় রয়েছে, পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে চলতে সবাইকে রীতিমত যুঝতে হচ্ছে।”

মাদক পাচার রোধ করার পাশাপাশি মাদক ব্যবহারজনিত স্বাস্থ্য জটিলতা কাটাতে মানুষকে সহায়তা করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে এ বিষয়ে আরও সহযোগিতা দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মহামারীর কারণে বিধিনিষেধের মধ্যে চোরাকারবারিরা মাদক পাচারের নতুন নতুন রুট খুঁজে বের করতে চাইতে পারে। সেই সঙ্গে ডার্ক নেটে তাদের তৎপতা এবং ডাকযোগে মাদক সরবরাহের চেষ্টাও বাড়তে পারে, যদিও কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক ডাক সেবা এখন বিঘ্নিত হচ্ছে।  

ইউএনওডিসি বলছে, মহামারীর মধ্যে আফিমজাত বিভিন্ন মাদকের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিতে পারে, তাতে মাদকসেবীরা অ্যালকোহল, বেনজোডায়াজেপিন বা বিভিন্ন সিনথেটিক ড্রাগ মিশিয়ে ব্যবহারের দিকে ঝুঁকতে পারে। শিরায় নেওয়ার মাদকের ব্যবহারও বেড়ে যেতে পারে।

২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার সময় বিভিন্ন দেশ যেভাবে মাদক প্রতিরোধ এবং এ সংক্রান্ত চিকিৎসা খাতে খরচ কমিয়ে দিয়েছিল, এবারও তেমন হলে তার ফল খারাপ হবে বলেও সতর্ক করেছে জাতিসংঘের এ সংস্থা।