ভাইরাস নিয়ে আলোচনায় মগ্ন দুই পাইলট, তাতেই বিধ্বস্ত পাকিস্তানি বিমান

করাচির আবাসিক এলাকায় গত মাসে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের (পিআইএ) উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছিল ‘মানুষের ভুলে’। প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে এমন তথ্য।

>>রয়টার্স
Published : 24 June 2020, 01:36 PM
Updated : 24 June 2020, 02:23 PM

বলা হচ্ছে, দুই পাইলট করোনাভাইরাস নিয়ে আলোচনায় এতটাই মগ্ন হয়ে পড়েছিলেন যে, বিমান চালানোয় তাদের মনোযোগ ছিল না। যার জেরে দুর্ঘটনা ঘটে।

বুধবার পাকিস্তানের বিমান পরিবহনমন্ত্রী গুলাম সারোয়ার খান পার্লামেন্টে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করে বলেছেন, বিমানের দুই পাইলট এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের কর্মকর্তারা কেউই প্রটোকল অনুসরণ করতে পারেননি।

পাইলটদের ‘মনোযোগ’ ছিল না জানিয়ে সারোয়ার খান বলেন, “তারা সারাক্ষণ করোনাভাইরাস নিয়ে আলোচনা করে গেছেন। তাদের মনের মধ্যে ছিল এ বিষয়টিই। তাদের পরিবার করোনাভাইরাসের কবলে পড়েছে। আর সেটি নিয়েই তারা আলোচনা করছিলেন।”

দুর্ঘটনাকবলিত উড়োজাহাজটির ককপিটের ভয়েস রেকর্ডারে পাইলট এবং কো-পাইলটের মধ্যে কথাবার্তার উল্লেখ করে মন্ত্রী একথা জানান।

তিনি বলেন, “উড়োজাহাজটির কোনও যান্ত্রিক গোলযোগ ছিল না। সেটি আকাশের ওড়ার জন্য ১শ’ ভাগই ফিট ছিল “

খান জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, পাইলট শেষ মুহূর্তেও বিমানের কোনো যান্ত্রিক ত্রুটির কথা জানাননি। কিন্তু অবতরণের আগে বিমানটি যে উচ্চতায় ওড়ার কথা ছিল সে নিয়মমাফিক উচ্চতায় সেটি ছিল না।

এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকে পাইলটকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে অবতরণ করতে মানাও করা হয়। কিন্তু পাইলট সে নির্দেশনা আমলে নেননি।

বিমান অবতরণের মুহূর্তে থাকার সময় পাইলটদেরকে সতর্ক করা হয়। তখন পাইলট বলেছিলেন, ‘আমি এটি সামলে নেব…’ কিন্তু পরক্ষণেই তারা আবার করোনাভাইরাস নিয়ে আলোচনা শুরু করেন।

ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডার থেকে দেখা গেছে, পাইলট ল্যান্ডিং গিয়ারও ঠিকমত নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি, বলেন মন্ত্রী সরোয়ার খান।

বিমান বিধ্বস্তের ঘটনাটির পূর্ণ তদন্ত প্রতিবেদন এক বছরের মধ্যে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

গত ২২ মে লাহোর থেকে ছেড়ে আসা ফ্লাইট পিকে ৮৩০৩ করাচির জিন্নাহ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে নামার সময় কাছের একটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়।

এয়ারবাস এ-৩২০ উড়োজাহাজটিতে ৯৯ জন আরোহী ছিলেন। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ৯৭ জনের।  বেঁচে যান মাত্র দুইজন।

পাকিস্তান বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সেই সময় উড়োজাহাজটির যান্ত্রিক ত্রুটি থাকার কথা বলেছিলেন।