করোনাভাইরাস: যুক্তরাষ্ট্রে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারের অনুমোদন প্রত্যাহার

কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় জরুরি পরিস্থিতিতে ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার করার অনুমোদন প্রত্যাহার করে নিয়েছে মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন-এফডিএ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 June 2020, 04:10 AM
Updated : 16 June 2020, 04:10 AM

সোমবার এফডিএ জানিয়েছে, ক্লিনিকাল ট্রায়াল থেকে পাওয়া নতুন প্রমাণে বোঝা গেছে ওষুধটি ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রভাব ফেলে এমন বিশ্বাস আর যুক্তিসঙ্গত নয়।

রয়টার্স জানায়, এফডিএ-এর এই সিদ্ধান্ত আসার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারের পক্ষে তার প্রচার ‘ঠিক ছিল’ বলে সাফাই গেয়েছেন।

গত মার্চ মাসে এফডিএ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ওষুধটি জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়।

তবে সোমবার সংস্থাটি জানায়, ক্লিনিকাল সমীক্ষায় দেখা গেছে, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন মারাত্মক এই ভাইরাসের চিকিৎসায় অকার্যকর এবং এটি সংক্রমণ রোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

কয়েক দশকের পুরানো ম্যালেরিয়ার ওষুধটি নিয়ে একাধিক গবেষণায় এটি কোভিড-১৯ প্রতিরোধে এবং চিকিৎসায় অকার্যকর প্রমাণের পর এফডিএ এই সিদ্ধান্ত নিল।

ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা এ মাসের শুরুর দিকে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনকে ‘অকার্যকর’ বলে সিদ্ধান্ত দিয়ে বড় একটি পরীক্ষা বন্ধ করে দেন।

এফডিএ-এর সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প বলেছেন, তিনি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে নিজেই ওষুধটি খেয়েছিলেন এবং তাতে কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি।

সোমবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি এ নিয়ে অভিযোগ করতে পারি না। আমি এটি দুই সপ্তাহ ধরে খেয়েছি।

“আমি জানি না এর প্রভাব পড়েছিল কিনা। কিন্তু নিশ্চিতভাবেই এটা আমার ক্ষতি করেনি”

৭৪ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দাবি, অনেক লোক তাকে বলেছিল ওই ওষুধ তাদের জীবন রক্ষা করেছে।

গত মে মাসে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, হোয়াইট হাউজে দুইজনের করোনাভাইরাস ‘পজিটিভ’ আসায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে তিনি ওষুধটি খাচ্ছেন। অন্যদেরও তিনি ওষুধটি খেতে পরামর্শ দেন।

হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন নিয়ে তার মন্তব্যগুলো অনলাইনে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনার জন্ম দেয়। ওই ওষুধ এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত আরেকটি ওষুধ ক্লোরোকুইনের সম্ভাব্য উপকারী এবং ক্ষতিকারক প্রভাবগুলো নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যেও বিতর্ক শুরু হয়।

বিশ্বখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দাবি করা হয়, ওষুধটি কিছু রোগীর হৃদরোগের সমস্যা ও মৃত্যু ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। এর ফলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং আরও কিছু সংস্থা ওষুধটির পরীক্ষামূলক ব্যবহার থামিয়ে দেয়।

কিন্তু উপাত্তে গুরুতর ত্রুটি থাকায় ল্যানসেট পরে গবেষণাপত্রটি প্রত্যাহার করে নিলে ডব্লিউএইচও আবার পরীক্ষা শুরু করে।

এই সংক্রান্ত আরও খবর: