বিক্ষোভ দমনে সেনা মোতায়েনের বিরোধিতায় মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্নাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যা নিয়ে বিক্ষোভ দমনে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সেনা মোতায়েনের হুমকির পর এর বিরোধিতা করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 June 2020, 05:53 PM
Updated : 3 June 2020, 05:53 PM

বুধবার এসপার বলেছেন, বর্ণবাদী অন্যায়, অবিচার এবং ফ্লয়েডের মৃত্যু নিয়ে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া অস্থিরতা প্রশমনে সেনা মোতায়েন করাকে তিনি সমর্থন করেন না।

পেন্টাগনে এক বক্তব্যে এসপার বলেন,“ একমাত্র শেষ উপায় হিসাবেই সক্রিয় দায়িত্বে থাকা সামরিক বাহিনীকে আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর ভূমিকায় নামানোর বিকল্প পথ অবলম্বন করা উচিত। পরিস্থিতি খুবই গুরুতর এবং ভয়াবহ হলেই কেবল তা করা যেতে পারে। এখন আমরা সেরকম কোনো পরিস্থিতিতে পড়িনি।”

ফলে ‘ইনসারেকশন অ্যাক্ট’ (যে ফেডারেল আইনে প্রেসিডেন্ট সেনা মোতায়েনের ক্ষমতা রাখেন) এর শরণাপন্ন হওয়াটা সমর্থন করেন না বলেই জানিয়েছেন এসপার।

ফ্লয়েড হত্যাকে তিনি এক ‘ভয়ঙ্কর অপরাধ’ বলেও বর্ণনা করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এসপার বলেন, “তাকে (ফ্লয়েড) খুন করার জন্য ওই দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা কর্মকর্তাদেরকে জবাবহিদিতার মুখে দাঁড় করানো উচিত। এ এক মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা বহুবারই এর পুনরাবৃত্তি দেখে আসছি।”

গত সপ্তাহে মিনেসোটার মিনিয়াপোলিসে শ্বেতাঙ্গ এক পুলিশ কর্মকর্তার হাটুর চাপে দমবন্ধ হয়ে কৃষ্নাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক সপ্তাহ ধরে চলতে থাকা উত্তাল সহিংস বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে এসপার এ মন্তব্য করলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দুইদিন আগেই বিক্ষোভ দমনে সেনা নামানোর হুমকি দিয়েছিলেন। বড় বড় শহরগুলোতে লাগাতার সহিংস বিক্ষোভ ও লুটপাট ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ বন্ধের অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি।

অঙ্গরাজ্যের গভর্নররা ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনে রাজি না হলে ট্রাম্প নিজেই সেনাবাহিনী মোতায়েন করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন।

তিনি বলেছিলেন,“যদি কোনো শহর বা অঙ্গরাজ্য বাসিন্দাদের জানমালের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে আমিই যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী মোতায়েন করে তাদের হয়ে দ্রুত সমাধান এনে দেব।”

এর বিপরীতে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার দেশের নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকারকে সমর্থন করেছেন।

তিনি বলেন, “ এই অধিকার এবং স্বাধীনতাই আমাদের দেশের বিশেষত্ব। আমেরিকার সেনা সদস্যরা এই অধিকার এবং স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে মরতেও ইচ্ছুক।”

যুক্তরাষ্ট্রে মঙ্গলবার সহিংসতা কিছুটা কমে এলেও বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে। কিছু জায়গায় বিক্ষোভকারীরা কারফিউও ভঙ্গ করেছে। ফ্লয়েডের বাড়ি টেক্সাসের হিউস্টোনে বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়। তাতে অংশ নেয় ফ্লয়েডের স্বজনরাও।

টানা ৮ দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ করেছে হাজার হাজার মানুষ। কোথাও কোথাও বিক্ষোভে সহিংসতা হওয়ায় বিভিন্ন শহরে কারফিউ জারি করা হয়। বুধবার কিছু কিছু শহরে কারফিউ বাড়ানো হয়েছে।