লাদাখে ভারত-চীন সেনা মুখোমুখি, বাড়ছে উত্তেজনা

করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে লাদাখে তৈরি হয়েছে সংঘাতময় পরিস্থিতি। পূর্ব লাদাখে ভারত-চীন প্রকৃত সীমান্তরেখার বেশ কিছু অঞ্চলে দু’দেশের সেনার মুখোমুখি অবস্থানে বাড়ছে উত্তেজনা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2020, 11:55 AM
Updated : 26 May 2020, 12:16 PM

২০১৭ সালে ডোকলাম বিরোধের পর সীমান্তে দু'দেশের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বড় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

মে মাসের প্রথমদিকে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে হাতাহাতির পর কমান্ডাররা আলোচনা করে বিষয়টি মিটিয়ে নিলেও উত্তেজনা কমেনি, বরং তা আরো বাড়ছে।

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে চীন এবার অন্যান্যবারের তুলনায় ভিন্নরকম প্রস্তুতি নিয়েছে। প্যাংগং সো আর গালওয়ান উপত্যকায় বাড়তি দুই থেকে আড়াই হাজার সেনা মোতায়েন করেছে চীন।

এনডিটিভি জানায়, গত দু'সপ্তাহে গালওয়ান উপত্যকায় শক্তি বাড়িয়েছে চীনের সেনাবাহিনী। ১০০টি শিবির তৈরি করেছে তারা। বাঙ্কার তৈরিরও চেষ্টা চলছে।

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিতর্কিত এলাকায় ভারতও সেনা সমাবেশ বাড়িয়েছে। চীনের সেনার তুলনায় ভারতের সেনার সংখ্যা বেশি বলে জানিয়েছেন এক সেনা কর্মকর্তা।

দিন দিন পরিস্থিতির যে অবনতি ঘটছে তাতে দু’পক্ষ জলদি কোনো সমঝোতায় পৌঁছতে না পারলে রণক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে পূর্ব লাদাখের ‘লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কনট্রোল’ (এলএসি)এর আশপাশের এলাকা- এমনটিই আশঙ্কা সমর বিশেষজ্ঞদের।

ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর কাছে সবচেয়ে বেশি মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে, কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চীনা সেনার উপস্থিতি এবং সংখ্যাবৃদ্ধি। যেটা সবচেয়ে বেশি হয়েছে গালওয়ান উপত্যকায়।

অবসরপ্রাপ্ত নর্দান আর্মি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডিএস হুডা বলছেন, ‘‘বিষয়টি গুরুতর। পরিস্থিতি মোটেই স্বাভাবিক নয়, বরং যথেষ্ট অস্বস্তির। বেশ কিছু জায়গায় চীনের সেনা সীমান্তরেখা লঙ্ঘন করেছে। তার কথায়, এটি রুটিনমাফিক সীমান্ত লঙ্ঘন নয়। উদ্বেগের বিষয় সেটিই।”

তাছাড়া হুডা আরো বলেন, গালওয়ান নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে কোনদিন বিরোধ ছিল না। সেদিক থেকেও এ এলাকায় চীনা সেনা সমাবেশ উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

৫ মে দু’দেশের সেনার মধ্যে সংঘর্ষের পর থেকেই পূর্ব লাদাখ পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। ওইদিন ভারত ও চীনের সেনারা সংঘর্ষে জড়িয়েছিল লোহার রড, লাঠি নিয়ে। পাথর ছোড়াছুড়িও হয়েছিল।

পরে বৈঠকে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও ৯ মে উত্তর সিকিমে ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুপক্ষের সেনারা। ওই সময়েই চীন অভিযোগ করে, ভারতীয় সেনারা ঢুকেছিল তাদের এলাকায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত বছর অগাস্টে ভারত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পরেই ‘পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও আকসাই চীনকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ’ বলে দাবি করলে চীন অনেক বেশি চিন্তিত হয়ে ওঠে। তখন থেকেই ছক কষতে শুরু করে চীন।