করোনাভাইরাস: বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ৫০ লাখ ছাড়াল

বিশ্বজুড়ে শনাক্ত হওয়া কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ৫০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে, মৃত্যুর সংখ্যা পেরিয়েছে তিন লাখ ২৬ হাজার।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 May 2020, 06:40 AM
Updated : 21 May 2020, 11:07 AM

গত বছরের ডিসেম্বরের শেষদিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কয়েকজনের সন্ধান মেলার প্রায় পাঁচ মাসের মধ্যে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা অর্ধ কোটি ছাড়িয়ে গেল।

প্রথমে চীন, এরপর ইরান, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র এ প্রাদুর্ভাবের উপকেন্দ্র হয়ে উঠলেও সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দক্ষিণ আমেরিকায় প্রাণঘাতী নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেশি দেখা যাচ্ছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

গত কয়েকদিনে যে ৯১ হাজার নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে, তার এক তৃতীয়াংশই দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর। এরমধ্যে ২০ শতাংশের চেয়ে সামান্য বেশি শনাক্ত হয়েছে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে।

নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে ব্রাজিলে। দক্ষিণ আমেরিকার এ দেশটি অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যকে টপকে আক্রান্তের সংখ্যায় বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে। শুধু রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের উপরে আছে।

বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পর এখন ব্রাজিলেই প্রতিদিন সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হচ্ছে।

চীনে প্রথম ৪১ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছিল চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। পরে ভাইরাসজনিত অতি সংক্রামক রোগটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। ১ এপ্রিলের মধ্যেই বিশ্বজুড়ে শনাক্ত হওয়া আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখে পৌঁছে যায়। 

তার পরের ১০ লাখে সংক্রমিত হতে লাগে দুই সপ্তাহ। আর তার পরের ১০ লাখে পৌঁছতে লেগেছিল ১২ দিন। আরও ১০ লাখ বাড়তে লেগেছিল ১৩ দিন।

কিন্তু এর পরের ১০ লাখ সংক্রমণে লাগল সবচেয়ে কম ১০ দিন। সংক্রমিতের সংখ্যা ৫০ লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার আগের দিনই এক দিনে সর্বাধিক ১ লাখ রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

পাঁচ মাসেরও কম সময়ের মধ্যে বিশ্বজুড়ে নতুন করোনাভাইরাসে যে পরিমাণ আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে তা বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর মারাত্মক ফ্লুতে আক্রান্তের চেয়ে বেশি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থাটি। প্রতি বছর বিশ্বে গড়ে ৩০ থেকে ৫০ লাখ লোক ফ্লুর মারাত্মক সংক্রমণে ভুগে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ধারণা।

রয়টার্সের হিসাবে নতুন করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত তিন লাখ ২৬ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে বলে জানানো হলেও প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা এর চেয়ে বেশি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ভাইরাস শনাক্তে প্রয়োজনের তুলনায় কম পরীক্ষা এবং বিশ্বের অনেক দেশই হাসপাতালের বাইরের মৃত্যুকে হিসাবে যুক্ত না করায় মৃত্যুর প্রকৃত হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

কোভিড-১৯ এ এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে যত মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে তার অর্ধেকের বেশি ইউরোপে রেকর্ড হয়েছে।

প্রাণঘাতী এ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকর কোনো ওষুধ কিংবা প্রতিষেধক আবিষ্কৃত না হওয়ায় বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত-মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে। এর মধ্যেই অনেক দেশ সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে জারি করা লকডাউন শিথিল করে স্কুল ও ব্যবসা-বাণিজ্য খুলে দিয়ে অর্থনীতি পুনরায় সচলের পথে হাঁটছে।