কোভিড-১৯: প্রতিযোগিতায় ১২৩ ‘সম্ভাব্য টিকা’, ৭টির চলছে ‘হিউম্যান ট্রায়াল’

মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া নতুন করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক ও কোভিড-১৯ এর চিকিৎসাপদ্ধতি আবিষ্কারে বিশ্বব্যাপী ২০০টির মতো প্রতিষ্ঠান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 May 2020, 09:33 AM
Updated : 16 May 2020, 09:33 AM

যে ১২৩টি সম্ভাব্য টিকা নিয়ে কাজ হচ্ছে তার মধ্যে ৭টির ‘হিউম্যান ট্রায়াল’ চলছে বলেও ডনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।  

প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মডার্না মার্চেই মানুষের উপর তাদের টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করে।

পরে এ তালিকায় একে একে যুক্ত হয় বেইজিং ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিকাল প্রোডাক্টস, বায়োএনটেক (বিএনটি১৬২), ক্যানসিনো বায়োলজিকস (এডি৫-এনসিওভি), ইনোভিও ফার্মাসিউটিকেলস (আইএনও-৪৮০০), সিনোভেক বায়োটেক ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় (সিএইচএডিওএক্স১ এনসিওভি-১৯)।

শুক্রবার মার্কিন জৈবপ্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সরেনটো থেরাপেটিকসও (এসআরএনই) কোভিড-১৯ এর প্রতিষেধক বানানোর দাবি করেছে।

একইদিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ (এনআইএইচ) তাদের গবেষকরা করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য একটি টিকার পরীক্ষা শুরু করেছেন বলে নিশ্চিত করেছে।

জৈবপ্রযুক্তি নির্মাতা অন্য একটি প্রতিষ্ঠান নতুন পদ্ধতিতে করোনাভাইরাস শনাক্তে অনুমতি পাওয়ার কথাও জানিয়েছে।

এসআরএনই-র প্রধান নির্বাহী হেনরি জি তাদের বানানো অ্যান্টিবডি ওষুধটি কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ১০০ ভাগ কার্যকর বলে ফক্স নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন।  

তার এ দাবির পরপরই সরেনটোর শেয়ারের দাম ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে যায় বলে জানিয়েছে ডন।

পাঁচ মাসের মধ্যে বিশ্বের ৩ লাখেরও বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়া নতুন করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও গবেষকদের এ তোড়জোড়কে স্বাগত জানালেও এ নিয়ে এখনই উচ্ছ্বসিত হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি বলে মন্তব্য করেছে কোভিড-১৯ এর বিভিন্ন গবেষণা পর্যবেক্ষণকারী মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক মিলকেন ইনস্টিটিউট।

“কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য চিকিৎসাপদ্ধতি উদ্ভাবনে প্রায় ২০০টি প্রতিষ্ঠান করছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ১২৩টি টিকা নিয়ে কাজ চলছে। যদিও তার মধ্যে মাত্র ৭টির হিউম্যান ট্রায়াল শুরু হয়েছে,” বলেছে তারা।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের টিকা বানাতে চেষ্টার অর্থ হচ্ছে, সমগ্র বিশ্বই এখন করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক পেতে উদগ্রীব।

টিকা ও চিকিৎসা পদ্ধতির কোনোটিই চূড়ান্তভাবে সফল প্রমাণিত না হওয়ায় নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধরনের দাবি সংশয় সৃষ্টি করছে বলেও স্বীকার করেছেন তারা।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে দেওয়া এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধনির্মাতা প্রতিষ্ঠান মডার্না টিকা নিয়ে প্রতিযোগিতায় ‘অহেতুক আশাবাদী’ না হতেও অনুরোধ করেছে। 

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী স্টেফানে বানসেল অবশ্য সম্ভাব্য টিকাগুলোর মধ্যে ৭টির ‘হিউম্যান ট্রায়াল’ শুরুকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন।

“এ অল্প সময়ের মধ্যে এতখানি অগ্রগতি সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ী। আশাবাদী হওয়ার মতো যথেষ্ট যৌক্তিক কারণও আছে,” বলেছেন তিনি।