লকডাউন তোলার দাবিতে বিক্ষোভ জার্মানি-পোল্যান্ড সীমান্তে

মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে দেওয়া লকডাউন তুলে নেয়ার দাবিতে কয়েকশ মানুষ জার্মানি-পোল্যান্ড সীমান্তে বিক্ষোভ করেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2020, 10:08 AM
Updated : 25 April 2020, 10:08 AM

পোল্যান্ডের স্করজেলেক ও জার্মানির গরলিৎজ শহরের মাঝামাঝি থাকা একটি ফুটওভার ব্রিজের দুই পাশে শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় এ বিক্ষোভ হয় বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

ওই ফুটওভার ব্রিজই শহরদুটিকে সংযুক্ত করেছে। সীমান্ত বন্ধের আগে এ দুটি শহর কার্যত এক শহরের মতোই কাজ করতো।

স্করজেলেকের অসংখ্য অধিবাসী গরলিৎজে চাকরি করেন। লকডাউনের কারণে জীবিকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন তারা।

বিক্ষোভকারীরা সীমান্ত পার হলে বাধ্যতামূলক ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা তোলারও দাবি জানিয়েছেন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে পোল্যান্ডই সর্বপ্রথম সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিল। ভূখণ্ডে প্রবেশ করা সবাইকে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনাও জারি করে তারা।

“ছয় সপ্তাহ ধরে আমি বাড়িতে আটকে আছি; সীমান্ত পার হতে পারছি না। কাজে যেতে পারছি না। শিক্ষার্থীদের কাছে যেতে পারছি না,” বলেন মিরেলা ভিনকিভিচ।

লকডাউনের আগে স্করজেলেকের বাসিন্দা এ শিক্ষককে চাকরিসূত্রে নিয়মিতই গরলিৎজে যেতে হতো।

শুক্রবারের বিক্ষোভে সীমান্তের পোল্যান্ড অংশে ছিলেন প্রায় ৩০০ জন; জার্মানির অংশে দেখা গেছে আরও শতাধিক। ফুটওভার ব্রিজের দুই অংশে থাকা এ দুই দলের মাঝে প্রাচীর হয়ে ছিল ধাতব বেড়া।

“আমাদের কাজ করতে দাও, আমাদের বাড়ি যেতে দাও,” স্করজেলেকের বিক্ষোভে থাকা একটি ব্যানারে এমনটাই লেখা ছিল। বিক্ষোভকারীরা কখনও পোল্যান্ডের জাতীয় সংগীত কখনো ইইউ’র সংগীত গেয়ে নিজেদের ঊজ্জীবিত রেখেছিলেন।

সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা মেনে হওয়া এ বিক্ষোভে বেশিরভাগেরই মুখে মাস্ক ছিল বলে রয়টার্স জানিয়েছে। 

স্করজেলেক টাউন হলের রেনেতা বার্ডোজ জানান, পোল্যান্ডের প্রায় ২০ হাজার নাগরিক জার্মানির সাক্সনি অঞ্চলে কাজ করেন। এদের মধ্যে সাড়ে ১০ হাজার পোলিশকে প্রতিদিনই সীমান্ত টপকে কাজে যেতে হয়।

গরলিৎজে কর্মরত পোলিশদের সংখ্যাই তিন হাজারের কাছাকাছি, বলেছেন তিনি। 

লকডাউন তোলার দাবিতে কেবল স্করজেলেক-গরলিৎজ সীমান্তেই নয়, চেক প্রজাতন্ত্র ও জার্মানির সঙ্গে থাকা পোল্যান্ডের অন্যান্য সীমান্তেও বিক্ষোভ হয়েছে।

“মনে রাখা দরকার, পোলিশ শ্রমিকদের ফিরে যাওয়ার অপেক্ষায় সে চাকরিগুলো বসে থাকবে না। এ শ্রমিকরা কি রাষ্ট্রের কাছ থেকে সব ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতা পাবে?,” সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মাতিউস মোরাভিয়েচকিকে লেখা এক চিঠিতে এমনটাই জানতে চেয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিম পোল্যান্ডের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

চলতি মাসের শুরুতে দেওয়া এক ঘোষণায় মোরাভিয়েচকি সীমান্ত ৩ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

“এটা খুবই জটিল বিষয়। নাগরিকদের সমস্যার বিষয়টি বুঝতে পেরেছি আমি, সরকার আগামী সপ্তাহে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে,” শনিবার বেসরকারি রেডিও জেটকে এমনটাই বলেছেন পোল্যান্ড সরকারের এক মুখপাত্র।