ঘরবন্দি দশা নিয়ে বাড়ছে হতাশা, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ

করোনাভাইরাসের মহামারী নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে নাগরিকদের ঘরবন্দি থাকার যে নির্দেশনা জারি আছে, তা তুলে নেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন দেশটির বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দারা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2020, 06:02 AM
Updated : 19 April 2020, 08:23 AM

কয়েক সপ্তাহের এ লকডাউনে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি কার্যত অচল হয়ে পড়েছে; দেশটিতে বেকারভাতার আবেদন জানানো মানুষের সংখ্যাও ছুঁয়েছে নতুন রেকর্ড।

ঘরবন্দি দশার নির্দেশনা প্রত্যাহারের দাবিতে শনিবার টেক্সাস ও উইসকনসিনে কয়েকশ মানুষ বিক্ষোভ করেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

টেক্সাসের রাজধানী অস্টিনে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীরা ‘যুক্তরাষ্ট্র, আমাদের কাজ করতে দাও’ বলে স্লোগান ধরে। আর উইসকনসিনের ব্রুকফিল্ডে মূল সড়কের একপাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা নাড়িয়ে অঙ্গরাজ্য কর্তৃপক্ষের ঘরবন্দি দশার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানায়।

কেবল এই দুটি অঙ্গরাজ্যেই নয়, গত সপ্তাহ থেকেই ওহাইও, মিনেসোটা, মিশিগান ও ভার্জিনিয়াতে ‘ঘরে থাকার নির্দেশনা’ তুলে নেয়ার দাবিতে বিচ্ছিন্ন প্রতিবাদ চলছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব কর্মসূচিতে অংশ নেয়া বিক্ষোভকারীরা ‘সামাজিক দূরত্ব’ এবং মাস্ক পরার নির্দেশনা অবজ্ঞা করছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পও একের পর এক টুইটে এ বিক্ষোভকারীদের উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। মিশিগান, মিনেসোটা ও ভার্জিনিয়ার বাসিন্দাদের অঙ্গরাজ্যগুলোকে ডেমোক্রেট গভর্নরদের হাত থেকে‘মুক্ত করতেও’ ডাক দিয়েছেন তিনি।

নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই মার্কিন অর্থনীতিকে ফের শক্তিশালীরূপে হাজির করতে চাওয়া ট্রাম্প এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে তিন ধাপে শাটডাউন তোলার পরিকল্পনা হাজির করেছেন।

ওহাইও, মিশিগান, টেক্সাস ও ফ্লোরিডা ১ মে কিংবা তার আগেই কিছু প্রতিষ্ঠান ও কারখানা খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

ফ্লোরিডার রিপাবলিকান গভর্নর শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই বেশ কয়েকটি সমুদ্র সৈকতের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছেন। তবে স্কুলগুলো শিক্ষাবর্ষের বাকি সময় বন্ধ থাকবে বলেও শনিবার জানিয়েছেন তিনি।

টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবোটও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে একই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

রোববার সকাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ৩৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে; মৃতের সংখ্যা ৩৯ হাজার পেরিয়ে ছুটছে ৪০ হাজারের দিকে।

দেশটির অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে নিউ ইয়র্কেই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যুর দেখা মিললেও গত কয়েকদিনে সেখানে সংক্রমণের হার কমে আসার লক্ষণ মিলেছে। শুক্রবার নিউ ইয়র্কে কোভিড-১৯ এ ৫৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ, ১ এপ্রিলের পর এটিই অঙ্গরাজ্যটিতে একদিনে সবচেয়ে কম মৃত্যুর সংখ্যা।

নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকা রোগী ও ভেন্টিলেটর ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমে আসার পর নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো ‘বাজে অবস্থা কেটে গেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন।

পার্শ্ববর্তী রাজ্য নিউ জার্সিতেও নতুন আক্রান্ত ও হাসপাতালে ভর্তি হওয়া কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা কমতে দেখা যাচ্ছে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লকডাউন তুলে নিয়ে লোকজনকে কাজে ফেরার সুযোগ দিলে সংক্রমণ আরও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। ব্যাপক সংখ্যক পরীক্ষা, আক্রান্তদের শনাক্ত ও তাদের এন্টিবডি পরীক্ষারও পরামর্শও দিচ্ছেন তারা।