কোভিড-১৯: ধূমপায়ীদের ঝুঁকি বেশি, সতর্ক হওয়ার পরামর্শ

সিগারেট, মারিজুয়ানা কিংবা ই-সিগারেট সেবনকারীদের কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ও গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় বেশি হতে পারে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 April 2020, 04:51 AM
Updated : 10 April 2020, 04:51 AM

মহামারীর মতো সময়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকাটা স্বাস্থ্যসম্মত না হলেও অনেকটাই স্বাভাবিক: কিন্তু এ দুশ্চিন্তা দূর করতে অনেকেরই ধূমপানের যে প্রবণতা আছে, তা এবার বিপদের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে, বলছেন তারা।

করোনাভাইরাস মূলত ফুসফুসে আঘাত হানে। আর ধূমপায়ীদের ফুসফুস অন্যদের তুলনায় বেশি দুর্বল থাকে বলে নানান গবেষণায় দেখা গেছে।

ধূমপান মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও দুর্বল করে দেয়। ঝুঁকি কমাতে তাই ধূমপানের মাত্রা কমিয়ে আনতে কিংবা পারলে ছেড়ে দিতেই বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।

“মহামারীর এই সময়ে ধূমপান ছেড়ে দেওয়া কেবল আপনার নিজের জীবন বাঁচাতে পারে তাই নয়, আক্রান্ত হলেও আপনার হয়তো হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না, এভাবে আপনি অন্য আরেকজনের প্রাণও বাঁচাতে পারেন,” বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের অধ্যাপক ড. জনাথন উইনিকফ।

ম্যাসাচুসেটসের অ্যাটর্নি জেনারেল মরা হিলিকে নিয়ে উইনিকফ বৃহস্পতিবার যৌথভাবে অঙ্গরাজ্যটির বাসিন্দা বিশেষ করে তরুণদের উদ্দেশ্যে এক নির্দেশনাও দিয়েছেন। এতে ধূমপান ও ভ্যাপিংয়ের (ই-সিগারেটের মাধ্যমে ধোঁয়া সেবন) কারণে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

“আপনি ওই যন্ত্র কিংবা সিগারেট মুখের কাছে আনছেন, ধোঁয়া টেনে ভেতরে নিচ্ছেন। পরপর একই কাজ করছেন। এভাবে আপনি হাতে যা যা (জীবাণু) আছে তা শরীরের ভেতর পাঠিয়ে দিচ্ছেন। আমি ধূমপায়ী অনেক রোগীকে অন্যদের তুলনায় বেশি কাশি দিতে ও শ্লেষ্মা নির্গত হতে দেখেছি। এটাই সংক্রমণ বিস্তৃতির রেসিপি,” বলেছেন ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের টোবাকো রিসার্চ অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টারের শিশুরোগ চিকিৎসা বিষয়ক গবেষণার পরিচালক উইনিকফ।

সিগারেট সেবনকারীদের শারিরীক ক্ষতি নিয়ে নানান গবেষণা হলেও ই-সিগারেট তুলনামূলক নতুন হওয়ায় এর ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত পর্যাপ্ত তথ্য বিজ্ঞানীদের হাতে নেই। তবে কয়েকটি গবেষণা বলছে, ই-সিগারেট ফুসফুস ও শ্বাসনালীর জ্বালাপোড়ার কারণ হতে পারে।

চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর যাদের অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছিল তাদের মধ্যে ধূমপায়ীদের সংখ্যা অন্যদের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি বলে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনের সাম্প্রতিক এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

উইনিকফ বলছেন, সিগারেট বা ই-সিগারেট নয়, গাঁজা কিংবা মারিজুয়ানা সেবনও এই সময়ে মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে।

“এটা ফুসফুসের কোষগুলির ক্ষতি করতে পারে, ভাইরাসের বিস্তৃতিতে সহায়তা করতে পারে এবং সংক্রমণ মোকাবেলার সক্ষমতায় প্রভাব ফেলতে পারে। ফুসফুসের দরকার নির্মল বাতাস, বিশেষ করে বৈশ্বিক এ মহামারীর সময়ে,” বলেছেন তিনি।